আজকে আমরা করোনা ভাইরাস নিয়ে বিস্তারিত জানবো। আমরা একে একে জানবো,
- ভাইরাস কি?
- করোনা ভাইরাস কি?
- করোনা কিভাবে ছড়ায়?
- এর লক্ষণসমূহ কি কি?
- করোনা প্রতিরোধে কি করণীয়?
ভাইরাস কি?
ভাইরাস পশু-পাখি,মানুষ ইত্যাদির মধ্যকার বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। এটি আসলে কোনো জীব কিনা সে ব্যাপারটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছে দ্বিমত।
এটা হলো এমন এক অণুজীব যেটা জীবিত কোষের মধ্যেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। প্রথমেই বলে নিয়েছিলাম এটা প্রাণিদের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এগুলাকে দেখা সম্ভব না।
করোনা ভাইরাস কি?
করোনা ভাইরাসের অনেক ধরনের প্রজাতি আছে। এগুলোর মধ্যে একটা হলো ‘করোনা ভাইরাস’ বা ‘১৯ এনকভ’ বা ‘নোভেল করোনা ভাইরাস’ বা ‘কোভিড–১৯’। করোনা ভাইরাসের অনেক প্রজাতির মধ্যে সর্বশেষটা এই কোভিড-১৯ ভাইরাস।
তবে সব করোনা মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারেনা। মাত্র ৭ টা করোনা ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। এই ৭ টার মধ্যে ২০১৯-২০২০ সালের কোভিড-১৯ সর্বশেষ।
আমার এই লেখার পুরাটাই কোভিড-১৯ কে নিয়ে। তবে পুরো লেখায় কোভিড-১৯ কে করোনা ভাইরাস লিখবো। কারণ সবাই একে করোনা ভাইরাস নামে চেনেন। তবে আপনার মনে রাখতে হবে এই ভাইরাসের মূল নাম ‘কোভিড-১৯’।
এরকম অনেকগুলো ভাইরাসের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়েছে ‘করোনা ভাইরাস’। তাই করোনা ভাইরাস শুধুমাত্র একটি ভাইরাস নয়।
করোনা ভাইরাস ছড়ায় কিভাবে?
বিভিন্নভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয় মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে। হাঁচি, থুতু, কাশি এসবের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটে।
মনে করুন একজন আক্রান্ত ব্যাক্তি তার দুই হাত ঢেকে হাঁচি দিয়ে সেই হাতটি না ধুয়ে একটা বই ধরলেন। উনার হাত থেকে জীবাণুগুলো সেই বইতে রয়ে যাবে। ওটাতে যতজন ধরবে ততজনই আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকবে!
বই উদাহরণসরুপ লেখা হয়েছে। এখানে যেকোনো কিছুই হতে পারে। বই,চেয়ার,টেবিল,খাতা, কলম,মোবাইল,টিভি,রিমোট, ইত্যাদি ইত্যাদি। এজন্যই বলা হয় কোনোকিছু স্পর্শ করলে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে। কোনোকিছু স্পর্ষ করা পর হাত পরিষ্কার না করে হাত দিয়ে চোখ,মুখ,নাক ধরা যাবেনা।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি কি উপসর্গ দেখা দেয়?
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে যে উপসর্গ দেখা দেয়,
১. সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গ
- শুকনা কাশি হতে পারে।
- শরীরে দূর্বলতা ভাব থাকবে।
- জ্বর আসতে পারে।
২. ঝুঁকিপূর্ণ লক্ষণ বা উপসর্গ
- শরীরে ব্যথা অনুভূত হবে।
- ডায়রিয়া/আমাশয়
- গলা ব্যথা
- আঙ্গুলের রঙে বিবর্ণতা আসতে পারে।
- মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।অর্থাৎ আপনি খাবারের স্বাদ পাবেন না।নাকে কোনো গন্ধই পাবেন না। অর্থাৎ গন্ধ বা স্বাদ নেয়ার ক্ষমতা কমে যাবে।
- ত্বকে ফুসকুড়ি পড়তে পারে।
- মাথা ব্যথা হতে পারে।
৩. গুরুতর লক্ষণ বা উপসর্গ
- কথা বলার মতো শক্তি থাকবেনা।
- শ্বাসকষ্ট হবে।
- বুকের মধ্যে ব্যথা অনুভূত হবে।
মূলত গুরুতর লক্ষণ না হলে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন পড়েনা। বাসায় বসে বসে চিকিৎসা নিলেই হয়। সুস্থ সময় লাগে ৫ থেকে ১৪ দিন। এই সময়টাতে ঘরেই থাকবেন। কারণ আপনার অবাধ বিচরণ অন্যকে আক্রান্ত করবে।
তবে গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুতই হসপিটালের সহযোগীতা নিন। অনুগ্রহ করে হেলাফেলা করবেন না। আপনার অসতর্ক আচরণ অন্য সবাইকেই বিপদে ফেলতে পারেন। তাই যতটুকু সম্ভব সতর্ক থাকার চেষ্টা করুন। জীবন তো গল্প সিনেমার কাহিনী না। সাবধান থাকবেন।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কি করবেন?
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে আমাদের যা যা করা উচিত,
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাঅনুযায়ী করোনা ভাইরাস এর জন্য স্যানিটাইজার এবং মাস্ক সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র।
মাস্ক ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করে এবং স্যানিটাইজার ভাইরাসকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। - মাস্ক খুলে হাঁচি-কাশি দিবেন না।
- ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজ দায়িত্বেই মানুষের সাথে চলাফেরা বন্ধ করতে হবে।
- হাঁচি কাশি দেয়ার সময় মুখে মাস্ক না থাকলে নিজের কনুই ব্যবহার করুন।
- একটু পরপর সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন।
- হাঁচি-কাশি দিচ্ছেন এমন মানুষ থেকে অবশ্যই দুরত্ব বজায় রাখবেন।
- কোনোকিছু স্পর্শ করার পর অবশ্যই হাত না ধুয়ে সেই হাত দিয়ে চোখ,নাক,মুখে হাত দিবেন না।
ধন্যবাদ।
No Responses