পুরাতন স্মার্টফোন কেনার সময় যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখবেন

আপনার, আমার, সবারই ইচ্ছে হয় ভালো ব্র্যান্ডের মানসম্মত এবং আকর্ষণীয় স্মার্টফোন ব্যবহার করতে। যদি ব্র্যান্ড নিউ এবং ইনটেক হয় তাহলে তো কথাই নাই।

কিন্তু এই সাধ এবং সাধ্য কি সবার একই সমান্তরালে চলে?

আপনার মত আমিও এই সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হিমশিম খেয়েছি এবং অনেক সময় আমি আমার সাধ পূরণ করতে পুরাতন ব্যবহৃত স্মার্টফোন কিনেছি অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে।

আজ আমি আমার অভিজ্ঞতার আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, একটি পুরাতন এবং ব্যবহৃত স্মার্টফোন কিনতে গেলে আমি কোন কোন বিষয় খেয়াল করি এবং সেগুলো গুরুত্বের সাথে দেখি।

চলেন শুরু করা যাক পুরাতন স্মার্টফোন কেনার সময় যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখবেন।

আমার মার্কেটপ্লেস এর কথা যদি বলেন প্রথমে আমি ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে আমার গেজেট এবং ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কিনতাম। কিন্তু অভিজ্ঞতা খুব একটা বেশি ভালো ছিলো না বলে পরে অথেনটিক মার্কেটপ্লেসের সন্ধান করি। আর সেক্ষেত্র আমি বিক্রয় ডট কম কে বেছে নিই।

বিক্রয় ডট কম এর মোবাইল ক্যাটাগরিতে দেখলাম ভালো মন্দ মোবাইল ফোনের বিশাল কালেকশন। প্রথমে একটু খটকা লাগছিলো কারণ, বাজারে বিদ্যমান মোবাইল ফোনের দামের সাথে পুরোনো ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের দাম কতটা সংগতিপূর্ণ তা নিয়ে । কিন্তু পরে কনফিডেন্স নিয়ে লেগে পড়লাম।

কিন্তু কেনার আগে আমি কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল করেছিলাম, যা যে কোন মানুষের জানা একান্ত জরুরি।

মোবাইলের ফিজিকাল কন্ডিশন

শুধু আমার কেন যে কোন মানুষের জন্য মোবাইলের ফিজিক্যাল কন্ডিশন ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা অনেক জরুরী। এটা আসলেই ব্যবহার উপযোগি কিনা তা আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে।

আপনি তো এমন ফোন কারোর সামনে নিয়ে যাবেন না, যে ফোনের স্ক্রিন সামান্য হলেও ফাটল ধরেছে বা আপনার ব্যবহার করতে অস্বস্তিবোধ করবেন। ফোনটিতে কোন স্ক্র্যাচ এর দাগ থাকুক তাও আপনি অবশ্যই চাইবেন না। এককথায় দেখতে সামাঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে।

মোবাইলের টাচস্ক্রিনের কার্যকারিতা

মোবাইলের টাচস্ক্রিনের কার্যকারিতা

আমিও একবার এইরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। মোবাইল সেলার খুব জরুরি ভিত্তিতে মোবাইল বিক্রি করতে চাইছিলেন। তার স্ক্রিনে কিছুটা ডিফেক্টেড ছিল যা আমার সাথে সে শেয়ার করে নাই। কিন্তু আমি সেই স্ক্রিনের টাচস্ক্রিনের সবগুলো পয়েন্টে টাচ করে দেখতে থাকলাম।

সে বলছিলো নতুন স্ক্রিন কোন সমস্যা নাই, কিন্তু আমার কেন জানি সন্দেহ হলো আমি আরো ভালোভাবে চেক করা শুরু করলাম। কিছু কিছু পয়েন্টে আমি দেখলাম আমার সমস্যা হচ্ছে। সবচেয়ে সমস্যা হয়েছিলো স্ক্রলিং এর সময়।

তখন আমি ব্যাপারটা তার সাথে শেয়ার করা মাত্র আমার সাথে আসল ঘটনা শেয়ার করলো যে, সে শুধু মোবাইল বিক্রি করার জন্য কম দামি একটা স্ক্রিন ডিসপ্লে লাগিয়েছিলো, যেটা ছিলো তার ফোনের আসল সমস্যা।

এবং ঐ ডিসপ্লে দিয়ে হয়তোবা আমি মাসখানেক ব্যবহার করতে পারতাম কিন্তু একটা সময় যাওয়ার পর আমি আবার অসুবিধার সম্মুখীন হতাম। যদিও সব সেলার একরকম না। তবে অবশ্যই আপনাকে যাচাই বাছাই করে কিনতে হবে।

ইউ এস বি এবং চার্জিং পোর্ট যাচাই

ইউ এস বি এবং চার্জিং পোর্ট যাচাই

ইউ এস বি এবং চার্জিং পোর্ট ঠিক আছে কিনা তা যদি যাচাই করে নেয়া যায়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। অনেক সময় ডিফেক্টেড চার্জিং এবং ইউ এস বি পোর্ট এর জন্য অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় সার্ভিসিং এর জন্য মার্কেটে পেতে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

আনঅফিসিয়াল বৈদেশিক ফোন ব্যবহারে বিরত থাকুন

আমাদের দেশে অনেক মোবাইল ব্র্যান্ড অফিশিয়ালি যাত্রা করলেও এখনো অনেক গ্রে চ্যানেলের মাধ্যমে দেশের বাইরের ফোন বাংলাদেশে অনৈতিকভাবে প্রবেশ করে এবং অনেকেই অসৎ উদ্দেশ্যে কম সময়ে অধিক মুনাফার লোভে কাজ করছে। আপনাকে অবশ্যই এর থেকে সাবধান হতে হবে।

সেই ফোন কি দেশ থেকে কিনা আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে।
আবার অনেক সময় চোরাইচালানকারি গোয়েন্দা সংস্থা আপনাকে ট্রেস করতে পারলে আপনি পড়ে যাবেন বিপদে।

বোনাসঃ আপনার ফোনের বৈধতা যাচাই করবেন যেভাবে

ওয়ারেন্টি কার্ড নিশ্চিত করুন

অনেকেই আছেন যারা তিন থেকে ছয় মাস একটা ফোন ব্যবহার করার পর বিশেষ কারনে ফোন বেচে দেন। এক্ষেত্রে যদি ওয়ারন্টি কার্ড থাকে তাহলে আপনি অনায়াসে সংশ্লিষ্ট মোবাইলের যে কোন সার্ভিস সেন্টার থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদের সার্ভিস পাবেন।

এক্সেসরিজ

আপনার মোবাইলের সাথে যে এক্সেসরিজগুলো থাকবে যেমন চার্জার, এডপ্টার, এয়ারফোন তা আসলে অরিজিনাল এবং জেনুইন কিনা তা অবশ্যই নিশ্চিত করুন। যদি না হয় তাহলে বিক্রেতার সাথে দর কষাকষি করুন যাতে দাম কম করা যায় কিনা।

ক্যামেরা

আপনার যদি ক্যামেরা প্রায়োরিটি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্যামেরা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট এপ্লিকেশন যাচাই করে দেখুন আপনি আপনার কাংক্ষিত ছবি পান কিনা।

পারফরমেন্স

আপনি যদি গেমার হয়ে থাকেন এবং মোবাইলে গেমিং এর সব স্বাদ আস্বাদন করতে চান তাহলে বলবো আপনি অবশ্যই পারফেন্স যাচাই করে দেখুন। এর সফটওয়ার অপ্টিমাইজেশন এবং প্রসেসর, স্পিড অবশ্যই চেক করে দেখুন আপনার সাথে যায় কিনা।

পরিশেষে একটা কথা বলতে চাই, আপনাকে খুব সতর্কতার সাথে পুরাতন এবং ব্যবহৃত স্মার্টফোন কিনতে হবে। আপনার চাহিদা আপনাকেই বুঝতে হবে। আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে নতুনদের গাইড করেছি মাত্র।

আমাদের ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুন!

[★★] প্ৰযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করতে চান? এক্ষুণি টিউনার একাউন্ট খুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পোস্ট করুন! হয়ে উঠুন একজন দুর্দান্ত টেকটিউনার! এখানে ক্লিক করে নতুন একাউন্ট তৈরি করুন।

আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন

এই সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে

Add Comment

Skip to toolbar