হ্যাকিং গপ্প পর্ব – ১ (A to Z All About Hacking)

হ্হ্যাযাকিং কিং কি?

হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যেখানে কেউ কোন বৈধ অনুমতি ছাড়া কোন কম্পিউটার বা ডিভাইস অথবা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। সুতুরাং যারা হ্যাকিং করে তারা হচ্ছে হ্যাকার। হ্যাকিং নিয়ে এসব কথা তোমরা প্রায় সবাই জান।সচরাচর আমরা প্রায় সবাই জানি হ্যাকিং বলতে শুধু কোন ওয়েব সাইট হ্যাকিং আবার অনেকের ধারনা হ্যাকিং মানে শুধু কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক  হ্যাক করা,কিংবা কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করাকে বুঝি আসলে কি তাই? না আসলে তা না। হ্যাকিং অনেক ধরনের হতে পারে ধর তোমার মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও  ডিজিটাল যন্ত্র বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে তা ও হ্যাকিং এর আওতায় পড়ে।  হ্যাকাররা সাধারনত এসব ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের ত্রুটি অর্থাৎ দুর্বলতা খুঁজে বের করে এবং পরে সেই দুর্বলতা কে কাজে লাগিয়েই তারা সেই ডিভাইসে এক্সেস করে নিয়ে হ্যাক করে।

এবার আসি হ্যাকার কে বা কি?

হ্যাকারঃ সহজ কথায় যে ব্যক্তি কোন সিস্টেম বা ডিভাইস হ্যাকিং করে তাকেই হ্যাকার বলে। এরা যে সিস্টেম হ্যাকিং করবে ঐ সিস্টেমের গঠন, কার্য প্রনালী, কিভাবে কাজ করে সহ সকল তথ্য জানে। আগে তো কম্পিউটারের এত প্রচলন ছিলনা তখন হ্যাকার রা ফোন হ্যাকিং করত। ফোন হ্যকার দের বলা হত Phreaker এবং এ প্রক্রিয়া কে বলা হ্য Phreaking। এরা বিভিন্ন টেলিকমনিকেশন সিস্টেমকে হ্যাক করে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করত। কিন্তু জীবন যাত্রার মান উন্নয়েনের সাথে সাথে ডিভাইসের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে এবং সেই সাথে বেড়ে গেছে হ্যাকারের ধরণ ও পরিমাণও।

তিন প্রকারের হ্যকার রয়েছেঃ

বলে রাখি হ্যাকারদের চিহ্নিত  করা হয় Hat বা টুপি দিয়ে।

  1. White hat hacker
  2. Grey hat hacker
  3. Black hat hacker

 

White hat hacker: White hat hacker  একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে এবং ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিকে ত্রুটি দ্রুত জানায়। এবার সিকিউরিটি সিস্টেমটি হতে পারে একটি কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে্‌ একটি ওয়েব সাইট, একটি সফটোয়ার ইত্যাদি।

আসল কথা হচ্ছে এরা কারোর কোন ক্ষতির উদ্দেশ্যে হ্যাকিং করে না, এরা সৎ ভাবে সিস্টেম সিকিউর করার জন্য হ্যাকিং করে, এবং এরা বৈধ্য হ্যাকার।। J

Grey hat hacker: Grey hat hacker হচ্ছে দু মুখো সাপ। কেন বলছি এবার তা ব্যাখ্যা করি। এরা যখন একটি একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে তখন সে তার মন মত কাজ করবে। তার মন ঐ সময় কি চায় সে তাই করবে। সে ইচ্ছে করলে ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিকে ত্রুটি জানাতে ও পারে অথবা ইনফরমেশন গুলো দেখতে পারে বা নষ্ট ও করতে পারে। আবার তা নিজের স্বার্থের জন্য ও ব্যবহার করতে পারে। তাই এরা যখন যেভাবে ইচ্ছা সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করে সেইটাকে ইঞ্জেক্ট করতে পারে এবং চাইলে ভালো কিছু সেখান থেকে মালিক পেতে পারে কিংবা খারাপ কিছুও পেতে পারে।। :p

Black hat hacker: আর সবছেয়ে ভয়ংকর হ্যাকার হচ্ছে এ Black hat hacker। এরা কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করলে দ্রুত ঐ ত্রুটি কে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। ঐ সিস্টেম নষ্ট করে। বিভিন্ন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। ভাবিষ্যতে নিজে আবার যেন ঢুকতে পারে সে পথ রাখে। সর্বোপরি ঐ সিস্টেমের অধিনে যে সকল সাব-সিস্টেম রয়েছে সে গুলোতেও ঢুকতে চেষ্টা করে।

এরা সবসময় নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হ্যাকিং করে থাকে, যেমন কোন বুথ হ্যাকিং, কোন পেমেন্ট গেটওয়ে হ্যাকিং, যেখান থেকে তারা লাভবান হবে, এদের কে ধরা অনেক কঠিন।।

কিভাবে হ্যাকিং করে হ্যাকারঃ

প্রথমেই তারা তাদের যেই টার্গেট থাকবে সেই সিস্টেমের উপর এরা অনেক বেশি স্টাডি করে এবং সেই সিস্টেম সম্পর্কে সব ধারণা নিয়ে নেয়, গঠন প্রণালী, কিভাবে সেটি কাজ করে, তারপর সেই টার্গেটেড সিস্টেমের ভুলনারেবেলেটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করে, তারপর সেই দুর্বলতা কে কাজে লাগিয়ে তারা সেই সিস্টেমে এক্সেস তৈরি করে ঢুকে পড়ে।।

হ্যাকিং এর ধরণ অনেক রকম হতে পারে, ধরেন কেউ কোন ওয়েব সাইট হ্যাক করবে, তাহলে তাকে প্রথমেই জানতে হবে ওয়েব সাইট কিভাবে তৈরি করা হয়, এবং সেই ওয়েবসাইটটা কি ভাবে বা কোন ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে! তারপর সেই ওয়েবসাইটের দুর্বলতা খুঁজে নিয়ে তারা তাদের তৈরি শেল সেই ওয়েবসাইটে ইঞ্জেক্ট করে এবং পড়ে আডমিন প্যানেলে ঢুকে পড়ে।।

এছাড়াও কোন সিস্টেম হ্যাকিং এর জন্যে তারা ভাইরাস ছেড়ে দেয় সেই সিস্টেমে এবং সেই ভাইরাস গুলা হইতে পারে কোন ছবি বা ফাইল, মনে করেন কেউ আপনার কম্পিউটার কে টার্গেট করেছে, সে আপনাকে ইমেইলে একটা সুন্দর ছবি পাঠিয়ে বলেছে এইটা ডাউনলোড কর বা দেখ, যখনই আপনি ডাউনলোড করবেন বা সেই ফটো দেখবেন সাথে সাথে আপনার সিস্টেমের তথ্য তার কাছে যেতে থাকবে এমনকি সে কন্ট্রল ও করতে পারে আপনার কম্পিউটার,

এমন অনেক ভাবেই হ্যাকিং করা যায়, তাই প্রত্যেক জিনিস যতটানা সিকিউর তার চেয়ে বেশি দুর্বল হ্যাকারদের কাছে 😛

তাই বলা হয়ে থাকে “security is just an illusion” অর্থাৎ সিকিউরিটি হচ্ছে শুধু একটা মায়া বা মরিচিকা 😛

সত্যিই তাই, হ্যাকিং সম্পর্কে আজ তাহলে এ পর্যন্তই, পরবর্তী পর্বে আরও তথ্যবহুল কিছু আসছে ততখন আমাদের সাথেই থাকুন, এবং সাতার কাটতে থাকুন টেক জ্ঞানের রাজ্যে টেকটিউন্সের সাথেই।।

Add Comment