কি করে একটা মানুষ হিউম্যান ক্যালকুলেটর হতে পারে?

হিউম্যান ক্যালকুলেটর কেন হতে পারবে না? আমি যদি এখন আপনাকে হিউমেন ক্যালকুলেটর বানিয়ে দেই তাহলে বিশ্বাস হবে?

আসলে আমাদের ক্যালকুলেটর যে প্রোগ্রামে কাজ করে সেভাবে কাজ করে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন একজ কখনো কখনো ক্যালক্যুলেটরের আগেই সমস্যা সমাধান করতে পারবে৷ ক্যালকুলেটর আসার আগে মানুষ এভাবেই সমাধান বের করেছিল৷ কিন্তু ক্যালকুলেটর আসার পর সেই পদ্ধতিগুলো শিখা হয় না৷

আসলে হিউমেন ক্যালকুলেটর হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু মেথ ট্রিক ফলো করতে হবে৷ এই মেথডে যেকোনো মেথ আপনি সলভ করতে পারবেন৷ আপনি যার কথা বলছেন সে কিন্তু হিউম্যান ক্যালকুলেটর হলেও গট ট্যালেন্টসে গিয়ে কিছু নির্দিষ্ট টার্মের ভিতরের সলভ এর কথা বলেছে। কারণ এধরণের শত শত টার্ম আছে৷ সবগুলোকে একত্রে মনে রাখা সম্ভব নয়৷ তাই তাকে সেই টার্মের বাইরে প্রশ্ন করলে সে পারবে না৷ তবে সেই টার্ম থেকে করলে তাকে আটকানো যাবে না৷

এটা শোনে আপনি মনে করবেন না যে আপনিও যদি টার্ম শিখেন তাহলে আপনাকেও আটকানো যাবে না৷ আসলে এটাতে তারাই দ্রুত হবে যাদের মস্তিষ্ক একসাথে একটি কাজেই করে৷ কারণ আমাদের বেশিরভাগের মস্তিষ্কেই একসাথে দুনিয়ার চিন্তাভাবনা তাকে৷ তাই তীক্ষ্ণ ক্ষমতার মস্তিষ্ক যত হবে আনসার তত দ্রুত হবে৷ তবে টার্ম কিন্তু সবাইকেই মুখস্থ করতে হবে৷

হিউম্যান ক্যালকুলেটর

কি আছে সেই টার্মগুলোতে যেগুলো এত দ্রুত গণিত শেখায়?

চলুন হয়ে যাই হিউম্যান ক্যালকুলেটর!

আপনার সময় ৫ সেকেন্ড, ক্যালক্যুলেটর ব্যবহার না করে বলুনঃ ( 94×91=?)

1–2–3–4–5-⛔ কি হলো না তো?

উত্তর হচ্ছে 8554. এধরনের যেকোনো সংখ্যার মাল্টিফিকেশন সলভ করার ট্রিক হচ্ছেঃ

100 base এর নিচে যেকোনো দুটি সংখ্যার গুনফল বের করতে হলে আগে দেখতে হবে সংখ্যা দুটি ১০০ থেকে কত ছোট! এখানে ৯৪, ১০০ থেকে ৬ কম৷ আর ৯১ কম ৯৷ তারপর এভাবে বসান-

অর্থাৎ ১০০-৯৪=৬ বসান ৯৪ এর উপর, আর ১০০-৯১=৯ বসান ৯১ এর উপর৷ তারপর ৯১ থেকে ৬ ও ৯৪ থেকে ৯ বিয়োগ দিয়ে দেখেন যা আসবে তা একই৷ তাই যেকোনো একট এর বিপরীত ক্রস সংখ্যার থেকে বিয়োগ করে যে মানটি আসবে তা বসান প্রথম দুইঘরে৷ অর্থাৎ ৮৫_ _. যেহেতু দুই স্থানাংক বিশিষ্ট দুটি সংখ্যার গুনফল তাই উত্তর হবে চার দশমিক স্থান পর্যন্ত৷ সুতরাং বাকি থাকল আরও দুইঘর৷ তাহলে ৬×৯= ৫৪ এভাবে গুন করে বাকি দুই ঘরে বসিয়ে দিন! বেস হয়ে গেল ৮৫৫৪! এবার যদি ৬×৯ এর জায়গায় এমন দুটি সংখ্যা থাকত যাদের গুনফল দুই দশমিকের চেয়ে কম যেমন ১×৪=৪ তাহলে দুইঘর পুরো করতে ৪ এর আগে ০ বসিয়ে উত্তর লিখতে হবে৷ _ _ ০৪ এভাবে৷

আবার যদি আপনাকে বলি পাঁচ সেকেন্ডে আমাকে এই বর্গটা করে দাও?

(৫৪)^২=?

১-২-৩-৪-৫-⛔

এটা কীভাবে? ৩০-৭০ এর মধ্যে সংখ্যা গুলোর স্কয়ার নির্ণয় করতে আপনি যে ট্রিক ফলো করবেন সেটা হচ্ছে –

 

৫৪ এর সাথে ৫০ এর তফাৎ কত তা বের করা লাগবে! অর্থাৎ তফাত হচ্ছে ৪! আর তারপর ৫০ এর অর্ধেক অর্থাৎ ২৫ এর সাথে এটি যোগ করুন৷ কত হলো? ২৯ তাইনা? এখন যেহেতু দুই দশমিক ঘরের উপর বর্গ তাই উত্তর হবে চার দশমিক স্থানাঙ্কের অঙ্ক৷ এখন ৫০ থেকে ৫৪ এর তফাৎ বা ৪ এর বর্গ বাকি দুই ঘরে বসিয়ে দিতে হবে৷ অর্থাৎ ৪ এর বর্গ ১৬ বসিয়ে পাওয়া যায় ২৯১৬৷ সুতরাং আনসার হচ্ছে ২৯১৬=(৫৪)^২

এভাবে যদি ৪ এর নিচে হয় তাহলে এর বর্গ দুই দশমিক ঘরের হবে না৷ সেক্ষেত্রে দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত পুরো করতে আগের মতো এর আগে ০ বসাতে হবে৷ অর্থাৎ _ _ ০৯৷

এরকম শত শত ট্রিক রয়েছে৷ যাদের আন্ডরে শত শত গুনন করা যায়৷

যেমন যদি ১১ দিয়ে যত বড় সংখ্যাকেই গুন করেননা না কেন তা বের করতেও সময় লাগবে ৫ সেকেন্ড!

২৩৪৩২১৫×১১=?

প্রথমে ও শেষে আগের সংখ্যাটির মতো করে নেই,

অর্থাৎ প্রথমে ২ ও শেষে ৫ লিখি! এখন মাঝে দুই নম্বর ঘর থেকে বসাতে শুরু করি, আগের ঘরের সংখ্যা+এই ঘরের সংখ্যা= এই ঘরের নতুন সংখ্যা৷

অর্থাৎ পূর্বের দুই নং ঘর এ ২+৩=৫ বসবে৷

তদ্রূপ, ৩ নং এ ৩+৪=৭,

সুতরাং এভাবে আনসার হয় ২৫৭৭৫৩৬৫!

এভাবেই হিউমেন ক্যালকুলেটররা ক্যালকুলেশন করে৷ তবে তাদের সেটা দ্রুত সময়ে করার জন্য প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হয়৷ যার ফলে খুব দ্রুততম সময়ে তারা সেইটার উত্তর বলে দিতে পারে৷ আর বড় কথা হচ্ছে তারা সেটা মাথায় ক্যালক্যুলেশন করে! খাতায় লিখে নয়৷ তাই তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কটা দরকার হয়!

এভাবেই একজন মানুষ হিউম্যান ক্যালক্যুলেটর হয়েছে ৷ আর তার হওয়া আরও স্বাভাবিক কারণ তার মাথায় বউ বাচ্চা বা সংসারের চিন্তা নাই ।

ধন্যবাদ পড়ার জন্য!

Add Comment

Skip to toolbar