তথ্য প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষের এই সময়ে আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে কম্পিউটার। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাহলে আসুন আজকে কম্পিউটারের কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলি।
বিষয়টা ছিল, ‘কম্পিউটার ভুল করে কেন?’
একবার কম্পিউটারকে এক ইংরেজি বাক্য বাংলায় অনুবাদ করতে দেওয়া হল; বাক্যটি ছিল : আউট অব সাইট আউট অব মাইন্ড। কম্পিউটার এর অনুবাদ করল ‘অন্ধ ও মনভোলা ‘ কেন সে অনুবাদ করল না চোখের আড়াল হলেই মনের আড়াল?
দোষটা আসলে কম্পিউটারের না, দোষটা হচ্ছে যিনি কম্পিউটার অপারেট করছেন উনার। অনুবাদ করার সময় কম্পিউটার তার স্মৃতিভান্ডারে সঞ্চিত ডিকশনারি থেকে খুঁজে বিভিন্ন শব্দের অর্থ বের করে নেয়৷
আউট অব সাইট আউট অব মাইন্ড প্রভৃতি শব্দের অর্থ কম্পিউটার যা পেয়েছে সেগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে সাজিয়েই কম্পিউটার অনুবাদ করেছে। শব্দগত অর্থের দিক থেকে কম্পিউটার মোটেই ভুল করেনি৷ ভুল করেছেন তিনি, যিনি ওই অনুবাদের প্রোগ্রাম কম্পিউটারের জন্য তৈরি করেছেন।
প্রোগ্রামে যদি এমন নির্দেশ থাকত যে শুধু শব্দগত অর্থ নয়, বাগধারার অর্থও খুঁজে দেখো, পাশাপাশি কম্পিইটারের ডিকশনারিতেও সেসব বাগধারার অনুবাদ রাখা হতো, তাহলে কম্পিউটার ভুল করত না৷ কম্পিউটারের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই। তাকে যা করতে বলা হয় কম্পিউটার সেটাই করে৷ এবং নির্ভুল ও দক্ষতার সাথেই তা করে৷ সে জন্য কম্পিউটারকে বলা যায় ‘সবচেয়ে অনুগত ভৃত্য। ‘ কম্পিউটারের ভুল শুদ্ধ নির্ভর করে চালকের উপর অর্থাৎ প্রোগ্রামারের উপর।
অন্য যে বিষয় আমি শিরোনামে উল্লেখ করছি সেটি হচ্ছে ‘কম্পিউটার ভাইরাস৷’
এখান তাহলে কম্পিউটার ভাইরাস নিয়ে কিছু কথা বলা যাক।
আশির দশকে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞরা এক ধরনের ভাইরাসের সন্ধান পান, যা কম্পিউটারকে বিকল করে দেয়৷ কম্পিউটার ভাইরাস আসলে এক ধরনের বিপজ্জনক প্রোগ্রাম। এই বিপজ্জনজ প্রোগ্রামগুলো যদি কোনভাবে একবার কম্পিউটারের ভেতর প্রবেশ করতে পারে, তাহলেই ঘটে সর্বনাশ৷
কম্পিউটার ভেতর শুরু হয়ে যায় তাদের ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ। বিশেষ করে কম্পিউটারে সংরক্ষিত তথ্য বা ডেটা এইসব ভাইরাসের লক্ষবস্তু হয়ে থাকে৷ এইসব ভাইরা সংরক্ষিত ডেটাগুলো মুছে ফেলে বা পরিবর্তন করে ফেলে৷ ভাইরাস ধীরে ধীরে কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমে ঢুকে পড়ে।
বোনাসঃ কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত রাখার উপায়
আর সে দ্রুত নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে ছড়াতে থাকে এবং খুব দ্রুতই নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটারকেও আক্রান্ত করে ফেলে৷ ভাইরাসের এই প্রক্রিয়ায় কোন বিশাল কম্পিউটার নেটওয়ার্কও অকেজো হয়ে পড়তে পারে৷ বিভিন্ন কোম্পানির শক্ররা নানা কৌশলে কম্পিউটার ভাইরাস তথা ক্ষতিকর ভাইরাস প্রতিদন্ধীদের কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেয়। এটা অবশ্যই এক ধরনের কম্পিউটার জালিয়াতি৷ উন্নত দেশগুলোতে এই ধরনের জালিয়াতি শুরু হয়েছে৷
ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পাই এ দস্যুরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে পড়ে এবং ডেটাবেইজের তথ্য পরিবর্তন করে বা চুরি করে, এবং এক একাউন্টের টাকা অন্য একাউন্টে চালান করে দেয়, আবার কখনো ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষতিসাধন করে থাকে৷ অবশ্য এসব ভাইরাস জালিয়াতি প্রতিরোধের উপায়ও আছে।
কম্পিউটার ভাইরাস শনাক্ত করা ও বিকল করার প্রোগ্রামও ইতিমধে তৈরি হয়েছে। যাকে আমরা বলি ‘এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম‘৷ কোম কোন কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যেই ভাইরাস প্রতিষেধক ব্যবস্থা থাকে। বিশেষ পাসওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়, যার ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা ছাড়া আর কারো সে কম্পিউটারে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না৷ এর ফলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও কমে যায়৷
No Responses