বাটন মোবাইল কিনবেন? ২০২১ সালে নকিয়া বাটন মোবাইল নিয়ে হাজির হয়েছে।
সাধারণ ব্যবহারের জন্য কিংবা সেকেন্ডারি ফোন হিসাবে বাটন মোবাইল খুঁজছেন? দেখতে পারেন নকিয়া বাটন ফোন। চলুন জেনে নেয়া যাক, নকিয়া বাটন মোবাইল এর দাম, ফিচার, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করা যায় টেকটিউনস এর নতুন টিউনটি আপনাকে নকিয়া মোবাইল সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সাহায্য করবে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু বেস্ট ফোনে ও ফিচার
১। নকিয়া ১০৫ মডেল
বাংলাদেশের বাজারে সবচেয়ে কম দামে যে নকিয়া বাটন ফোনটি পাওয়া যায়, সেটি হলো নকিয়া ১০৫ মডেল। দেশের যেকোনো স্থানেই সাধারণ মোবাইল শপ কিংবা সার্ভিসিং এর দোকানে ফোনটি পাওয়া যাবে। নকিয়া ১০৫ ফোনটির দাম হলো ১,৫০০ টাকার মত।
নকিয়া ১০৫ এ থাকছেনা কোনো ৩জি বা ৪জি সুবিধা। ফোনটি ২জি প্রযুক্তি দ্বারাই চালিত। ফোনটির মধ্যে থাকা ৮০০মিলিএম্প এর ব্যাটারি ব্যবহার করে ১৪ঘন্টার উপরে কথা যাবে। ফোনটিতে রয়েছে ১.৭৭ইঞ্চির একটি ডিসপ্লে।
নকিয়া ১০৫ বাটন ফোনটিতে নেই কোনো ক্যামেরা। তবে ফোনটিতে রয়েছে কিছু ইন-বিল্ট গেমস ও অতি প্রয়োজনীয় এফএম রেডিও।এছাড়াও নকিয়া ১০৫ ফোনটিতে ব্লুটুথ ফিচারও রয়েছে। ফোনটি ডুয়াল সিম সাপোর্টেড। আপনি যদি সবচেয়ে কম দামে নকিয়া বাটন ফোন কিনতে চান, তাহলে এটি হতে পারে আপনার অন্যতম পছন্দ। ফোনটি আকারে ছোট এবং ব্যবহারে বেশ সুবিধাজনক।
নকিয়া ১০৫ এর চেয়ে বাজেট কিছুটা মাত্র বাড়ালেই পেয়ে যাবেন ডুয়াল সিম এর আরেক নকিয়া বাটন ফোন, নকিয়া ১১০। এই ফোনটিতেও ১.৭৭ইঞ্চি ডিসপ্লে রয়েছে। নকিয়া ১১০ এর দাম ২,১৪৯টাকা।
২। নকিয়া ১১০ 4G
নকিয়া ১০৫ এর চেয়ে দামে অল্প বেশি হওয়ার সুবাদে নকিয়া ১১০ এ যুক্ত হয়েছে অসংখ্য নতুন ফিচার। নকিয়া ১১০ এ রয়েছে একটি কিউভিজিএ (QVGA) ক্যামেরা। এছাড়াও ফোনটিতে ৩২জিবি পর্যন্ত মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহার করাও সুবিধাও রয়েছে।
রয়েছে এমপি৩ প্লেয়ার, যার মাধ্যমে এসডি কার্ড থেকে গান শোনা যাবে। নকিয়া ১১০ ফোনটিতে এছাড়াও এফএম রেডিও, ফ্ল্যাশলাইট এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সকল ফিচার।
৩। নকিয়া ২১৬ Dual Sim
৩,২৫০ টাকার ফিচার ফোন নকিয়া ২১৬ তে রয়েছে সামনে ও পেছনে উভয়দিকেই ০.৩মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। ২.৪ইঞ্চির ডিসপ্লের এই সুন্দর দেখতে ফোনটির ক্যামেরার পাশাপাশি আরেকটি ফিচার সবার নজর কাড়বে। সেটি হলো এই ফোনে রয়েছে বিল্ট-ইন অপেরা মিনি ব্রাউজার, যার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে।
এছাড়াও নকিয়া ২১৬ ফোনটি ৩২জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড সাপোর্টেড। ফোনটিতে একাধিক ফরম্যাটের অডিও ও ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট রয়েছে। ফোনটির ১০২০ মিলিএম্প এর ব্যাটারি দ্বারা ১৮ঘন্টার উপরে টক টাইম পাওয়া যাবে। ডুয়াল ক্যামেরা নকিয়া বাটন ফোন, নকিয়া ২১৬ তে স্টিরিও এফএম রেডিও ও ব্লুটুথ সুবিধাও রয়েছে। তবে থাকছেনা কোনো ৪জি সাপোর্ট।
৪। নকিয়া ২২০ ৪জি
নকিয়া ২২০ থেকে শুরু করে তালিকার বাকি ফোনগুলোকে ফিচার ফোনের প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিতে রাখা যায়। নকিয়া ২২০ এর দাম ৩,৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে ডুয়াল মিনি সিম ব্যবহার করা যাবে। রয়েছে স্টিরিও এফএম রেডিও।
নকিয়া ২২০ ফোনটিতে রয়েছে ২.৪ইঞ্চি ডিসপ্লে। ফোনটির পেছনে একটি ০.৩মেগাপিক্সেলের ভিজিএএ ক্যামেরা রয়েছে, যা ছবি তুলতে ও এমনকি ভিডিও করতেও সক্ষম। আবার ক্যামেরার সাথে এলইডি ফ্ল্যাশ ও রয়েছে।
নকিয়া ২২০ এর ফিচার এখানেই শেষ নয়। ফোনটিতে ইন-বিল্ট ২৪এমবি স্টোরেজের পাশাপাশি এসডি কার্ড ব্যবহার করে স্টোরেজ বাড়িয়ে নেওয়া যাবে ৩২জিবি পর্যন্ত। ফোনটিতে এমপি৩ গান শোনার পাশাপাশি, এমপি৪ ফরম্যাটের ভিডিও ও প্লেব্যাক সাপোর্ট রয়েছে।
৫। নকিয়া ৬৩০০ ৪জি
ফিচারে ঠাসা নকিয়ার বাটন ফোন, নকিয়া ৬৩০০ ফোনটি আজকালকার স্মার্টফোন থেকে পিছিয়ে নেই কোনোদিকেই। ফোনটিতে ডুয়াল সিম এর পাশাপাশি রয়েছে ৪জি সুবিধা।
কাই ওএস (KaiOS) ও কোয়ালকম এর স্ন্যাপড্রাগন ২১০ প্রসেসরের সমন্বয়ে তৈরী ফোনটিতে রয়েছে ৫১২এমবি র্যাম ও ৪জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। নকিয়া ৬৩০০ ফোনটিতে রয়েছে ২.৪ইঞ্চি ডিসপ্লে।
নকিয়া ৬৩০০ তে মাইক্রোএসডি কার্ড সাপোর্ট ও রয়েছে। ফোনটিতে রয়েছে ভিজিএ মেইন ক্যামেরা ও এলইডি ফ্ল্যাশ। তবে ফোনটিতে কোনো সেলফি ক্যামেরা নেই। ফোনটিতে স্মার্টফোন এর মত রয়েছে ওয়াফাই, হটস্পট, ব্লুটুথ, এমনকি জিপিএস সুবিধাও।
নকিয়া ৬৩০০ ফোনটির দাম ৫,২৯৯ টাকা।
৬। নকিয়া ৫৩১০
৪,৪৯৯টাকার ফিচার ফোন, নকিয়া ৫৩১০ ফোনটি দেখতে সুন্দর হলেও দাম হিসেবে তালিকার অন্যান্য ফোনের তুলনায় নগণ্যই বলা চলে। ফোনটিতে নেই ৪জি সুবিধা। নকিয়া ৫৩১০ ফোনটি ৩২জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড সাপোর্ট করায় এমপি৩ গান শোনা যাবে।
নকিয়া ৫৩১০ ফোনটিতে আরো রয়েছে ব্লুটুথ, এফএম রেডিও, ইত্যাদি সুবিধা। এছাড়াও ফোনটি ব্যবহার করে ইমেইল করাও সম্ভব। ফোনটির ব্যাকে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত একটি ০.৩মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাও রয়েছে।
৭। নকিয়া ৩৩১০
১৭ বছর পুরাতন ফোন হলেও জনপ্রিয়তার তেজ দেখে কিছুদিন আগেই বাজারে আবার নতুন করে নকিয়া ৩৩১০ ফোনটি ছাড়তে বাধ্য হয় নকিয়া। এই ফোনটি এর অসাধারণ বিল্ড কোয়ালিটির জন্য বহুলভাবে পরিচিত।
নকিয়া ৩৩১০ ফোনটিতে থাকা ১২০০মিলিএম্প ব্যাটারির কল্যাণে পাওতা যাবে ২২ঘন্টার উপরে টক টাইম। এছাড়াও ফোনটিতে এমপি৩ প্লেব্যাক করা যাবে ৫১ঘন্টার অধিক সময় ধরে।
নকিয়া ৩৩১০ ফোনটিতে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত ২মেগাপিক্সলের একটি ব্যাক ক্যামেরা রয়েছে, যা দ্বারা ছবি ধারণ ও ভিডিও রেকর্ডও করা যাবে। ফোনটির মেমরি কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা যাবে ৩২জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড।
ফোনটি ডুয়াল সিম সাপোর্টেড হলেও এর প্রাথমিক মডেলে থাকছেনা ৪জি বা ৩জি সাপোর্ট। তবে মার্কেটে এর আপডেটেড ৩জি ও ৪জি ভার্সন পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে দাম একটু বেশি হবে। ওয়াইফাই ডিরেক্ট ও হটস্পট এর মত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচারও রয়েছে নকিয়া ৩৩১০ ফোনটিতে।
৮। নকিয়া ৮১১০ ৪জি
বাটন ফোন হলেও নকিয়া ৮১১০ ফোনটিতে রয়েছে ৪জি সুবিধার পাশাপাশি ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস ও এফএম রেডিও সুবিধা। ২.৪ইঞ্চি ডিসপ্লের ফোন, নকিয়া ৮১১০ তে রয়েছে এলডি ফ্ল্যাশযুক্ত ২মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, যা দ্বারা ভিডিও রেকর্ড করাও সম্ভব।
নকিয়া ৮১১০ ফোনটির ১৫০০মিলিএম্প এর ব্যাটারি ব্যবহার করে ১১ঘন্টার উপরে টক টাইম পাওয়া যাবে। ফোনটিতে ৫১২এমবি র্যাম ও ৪জিবি স্টোরেজ রয়েছে। এছাড়াও ৬৪জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড ব্যবহার করে বাড়িয়ে নেওয়া যাবে ফোনের স্টোরেজ।
নকিয়া ৮১১০ ফোনটিতে একাধিক ফরম্যাটের অডিও প্লেবেক করা যাবে। সাথে রয়েছে এমপি৪ ফরম্যাটের ভিডিও প্লে করার সুবিধা।
কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ২০৫ প্রসেসর দ্বারা চালিত ফোন নকিয়া ৮১১০ এ রয়েছে ওয়াপ ২.০ যার ফলে এক্সএইচটিএমএল ব্রাউজার ব্যবহার করা যাবে। ফোনটি চলবে কাইওএস দ্বারা।
নকিয়া ৮১১০ ফোনটিতে আরো রয়েছে গুগল সার্চ, গুগল ম্যাপ ও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মতো স্মার্টফোনভিত্তিক সব সুবিধা। এছাড়াও ফোনোটিতে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, জিমেইল ইত্যাদি।
নকিয়া ৮১১০ ফোনটির দাম ৬,৪৯৯ টাকা। এই দামে বাজারে বর্তমানে স্মার্টফোন পাওয়া যায়। তবে এই হালকা কার্ভ করা ফোনটি দেখলেই যেকারো ভালো লেগে যেতে বাধ্য প্রথম দেখাতেই। তবে ফিচারের দিক দিয়ে কোনো কমপ্রোমাইজ থাকছেনা ফোনটিতে।
৯। নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ
বাটন ফোনকে বিলাসিতার পর্যায়ে স্থান করে দিয়েছে নকিয়ার তৈরী বাটন ফোন, নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটি। প্রায় ৯ হাজার টাকার ফোনটির দামে হয়ত নতুন স্মার্টফোন পেয়ে যাবেন, কিন্তু ফোনটির যে ডিজাইন ও সৌন্দর্য এটি কিন্তু আসলেই অগ্রাহ্য করার মত নয়।
নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটি মাঝ বরারবর ফ্লিপ করা যায়, যা এই ফোনটির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। ফোনটি ডুয়াল সিম সাপোর্টেড, রয়েছে ৪জি এলটিই সুবিধাও। নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনের ব্যাকে রয়েছে ২মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, যা ভিডিও রেকর্ডে সক্ষম।
নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটি চলে কাই ওএস ও কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ২০৫ প্রসেসর দ্বারা। ফোনটিতে রয়েছে ইন্টারনেট সুবিধা। ব্যবহার করা যাবে গুগল এর অ্যাপ, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইত্যাদি।
নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটিতে ৫১২এমবি র্যাম রয়েছে। ফোনটিতে ৪জিবি স্টোরেজ রয়েছে যা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে ৩২জিবি পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়াও ফোনটিতে ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, এফএম রেডিও এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সকল ফিচার তো থাকছেই।
একাধিক অডিও ফাইল ফরম্যাটের পাশাপাশি এমপি৪ ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট করে নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটি। এছাড়াও অরগানাইজার, ভয়েস মেমো, প্রিডিকটভ টেক্সট ইনপুগ এর মতো ফিচার রয়েছে ফোনটিতে।
তবে ফোনটির সবচেয়ে “Cool” দেখতে ফিচার এর কথা বলাটা বাকি থেকে গেলো। নকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটিতে ২.৮ইঞ্চির ডিসপ্লের পাশাপাশি ফোনের ব্যাকে আরেকটি ডিসপ্লে রয়েছে, যার কেউ কল করলে তার নাম ও প্রদর্শনে সক্ষম।
এই নকিয়া বাটন ফোন এর তালিকায় আপনার পছন্দের ফোন কোনটি? আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে। উল্লেখ্য যে, বাটন ফোনগুলোর প্রদত্ত দাম বাজারে কম বা বেশি হতে পারে।
No Responses