সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব প্রতারণা থেকে সাবধান হওয়া জরুরি

সোশ্যাল মিডিয়াতে সচরাচর বিভিন্ন ধরনের স্ক্যাম বা প্রতারণা ঘটে থাকে। কোনো ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে প্রতারিত কিভাবে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তা জেনে রাখা জরুরি। এই পোস্টে জানবেন কিছু সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্যাম সম্পর্কে যেগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি।

কারা আপনার ফেসবুক প্রোফাইল দেখছে তা দেখুন !?

টাইটেলে উল্লেখিত শিরোনাম বা একই ধরনের শিরোনামে হয়ত ইতিমধ্যে ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে অনেক পোস্ট দেখে থাকবেন। এই ধরনের “ক্লিকজ্যাকিং” স্ক্যাম মানুষের জিজ্ঞাসাপ্রবণ অভ্যাসকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেয়। এই ধরনের টুল ব্যবহার করে কে আপনার প্রোফাইল দেখছে তা তো দেখা যায় ই না, আবার অনেক সময় সার্ভে বা জরিপ এর নাম করে হাতিয়ে নেওয়া হয় ব্যক্তিগত তথ্য।

মূলত এসব ব্যক্তিগত তথ্য তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে এসব কোম্পানি। আবার মাঝেমধ্যে ফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকে যায় এসব সাইটের মাধ্যমে। তাই ”See who’s viewed your profile / কারা অজান্তে আপনার প্রোফাইল ঘুরছে” এই ধরনের ক্লিকবেইট মার্কা লিংকে ক্লিক করে নিজের একাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নষ্ট করবেন না।

লটারি / গিভএওয়ে

সোশ্যাল মিডিয়াতে সবচেয়ে কমন স্ক্যাম হলো লটারি বা গিভওয়ে। এটি একটি পরিচিত স্ক্যাম হওয়া সত্ত্বেও এখনো অধিকাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারী এই বিষয়টি নিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট করে। এই ধরনের প্রতারণা বিভিন্ন ভাবে হয়ে থাকে।

কিছু প্রতারণার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পেজের লাইক বা গ্রুপের মেম্বার বাড়াতে লটারির নাম করে বিভিন্ন পেজে লাইক দিতে বলা হয় বা গ্রুপে মেম্বার এড করতে বলা হয়। এই ব্যাপারটি আপনার ফেসবুক একাউন্টের জন্য স্প্যাম হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

অন্য এক ধরনের প্রতারণায় বলা হয় আপনি কোনো এক লটারি জিতেছেন, লটারির টাকা আপনাকে খুব শীঘ্রই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর প্রতারক আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠানোর নাম করে ব্যাংক ফি, ট্রান্সফার ফি, ইত্যাদির কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিবে।

[ ?] ফেসবুক প্রোফাইল, পেজ ভেরিফাই করবেন কীভাবে

এই ধরনের প্রতারণা এড়িয়ে চলা বেশ সহজ। যেকোনো ধরনের লটারি বা গিভওয়ে আসল কিনা তা জানতে টার্মসস এন্ড কন্ডিশনস চেক করুন। আর আপনি নিজ থেকে অংশগ্রহণ না করেই পুরস্কার জিতেছেন, এমন বিষয়ে ভুলেও বিশ্বাস করতে যাবেন না। যদি কোনো লটারি বা গিভওয়ে এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট শর্তাবলী না থাকে, তবে এটিকে রেড ফ্ল্যাগ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। এছাড়া নিজের বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করে দেখুন।

একাউন্ট ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছে

এই ধরনের স্ক্যাম সাধারণত ইমেইল এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। অভিনব পদ্ধতিতে হ্যাকাররা সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। মেসেজ করে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ক্যান্সেল হওয়ার কথা জানিয়ে পাসওয়ার্ড ও ইউজারনেম নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পরে ব্যবহারকারীর ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি করতে এই তথ্য ব্যবহৃত হয়।

তাই কখনো সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো তথ্য আপডেট করতে হলে সরাসরি উক্ত সাইটে প্রবেশ করে তবে তা চেক করুন। অন্যভাবে পাওয়া কোনো লিংক ক্লিক করা এড়িয়ে চলুন।

ইমেইল একাউন্ট কনফার্ম করুন

পূর্ববর্তী স্ক্যামের মত এই ফিশিং এর ক্ষেত্রেও ইমেইল একাউন্ট বা অন্য কোনো সিকিউরিটি সংক্রান্ত বিষয় কনফার্ম করতে বলা হয়। আর এই কনফার্মেশনের নামে ব্যবহারকারীর ইমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া ডিভাইসে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার ইন্সটল হয়ে যাওয়া তো একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

[ ?] ফেসবুক থেকে টাকা আয়ের নতুন উপায় ফেসবুকেও শর্ট ভিডিও

রাতারাতি বড়লোক হওয়া

সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব প্রতারণা থেকে সাবধান হওয়া জরুরি

অর্থ সবাইকে আকৃষ্ট করে, এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। আর কিছু প্রতারক চক্র মানুষের এই স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যকে পুঁজি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে আসছে। এই ধরনের স্ক্যাম এর ক্ষেত্রে ফেসবুক, টুইটার বা ইন্সটাগ্রামে অর্থ ইনভেস্ট করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কথা বলা হয়। পোস্টে আয়ের পরিমাণসহ উল্লেখ করা হয়।

সহজভাবে একটা বিষয় দেখুন। কেউ যদি টাকা ইনভেস্ট করে তা দ্বিগুণ বা তিনগুণ করতে জানে, তবে সে তা নিজের কাজের ব্যবহার না করে আপনাকে কেনো সাহায্য করবে?

[ ?] যেভাবে ফেসবুক আইডি লুকিয়ে রাখবেন

বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্যাম এর ক্ষেত্রে একটু ভাবলে প্রতারণার বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। আপনি যদি ইনভেস্ট এর মাধ্যমে টাকা বাড়াতে চান, তাহলে কোনো এক্সপার্ট এর সাথে এই বিষয়ে আলাপ করুন। ভুলেও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা পোস্টকে যাচাই না করে বিশ্বাস করে ঠকতে যাবেন না।

ফটো অফ ইউ

কিছুদিন আগে এই স্ক্যামে ভরে গিয়েছিলো সম্পূর্ণ ফেসবুক। মূলত একটি লিংকের থাম্বনেইল হিসেবে ভিক্টিম এর ছবি সেট করা হয়। এরপর ভিকটিম কে বলা হয় “Photos of you” দেখতে। আর এই ছবি দেখার জন্য ওয়েবসাইট লিংকে ক্লিক করে তাদের ফাঁদে পড়লে একাউন্ট হ্যাক হয়ে যাবে কিংবা একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যাবে হ্যাকার। এটি মূলত এক ধরনের ফিশিং স্ক্যাম যা একাউন্টের লগিন তথ্য চুরিতে প্রচুর ব্যবহার করা হয়।

[ ?] লক করা ফেসবুক প্রোফাইল দেখার উপায়

ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রিটি স্ক্যাম

সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব প্রতারণা থেকে সাবধান হওয়া জরুরি

ইন্টারনেটে যত প্রতারণা হয়ে থাকে, তার মধ্যে ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রিটি স্ক্যাম সবচেয়ে মারাত্মক হয়ে থাকে। মূলত জনপ্রিয় সেলিব্রিটির ফ্যান পেজ খুলে তাতে প্রচুর ফেইক ফলোয়ার ও লাইক নিয়ে আসে একজন প্রতারক। আর ফলোয়ার ও লাইক এর কারণে এসব একাউন্টের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে, যাকে পুঁজি করে একজন প্রতারক তার প্রতারণার ফাঁদ পাদে।

একজন প্রতারক যে সেলিব্রিটির নামে ফ্যানপেজ খুলেছে, তার ফ্যানদের উপর নজর রাখে। এরপর মাত্রাতিরিক্ত যেসব ভক্ত আছেন, তাদের কে টার্গেট করা হয়। উক্ত ব্যক্তিদের মেসেজের মাধ্যমে তাদের পছন্দের সেলিব্রিটির সাথে দেখা করার সুযোগ প্রদানের কথা বলা হয়৷ এরপর এজেন্সি ফি কিংবা ভ্রমণ খরচ এর নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়।

টেলিগ্রাম ক্রিপটোকারেন্সি স্ক্যাম

ফোনে ক্রিপটোকারেন্সি মাইনিং এর নাম করে অসংখ্য টেলিগ্রাম গ্রুপ রয়েছে। অন্যসব প্রতারণার মতো এই ক্রিপটোকারেন্সি মাইনিং এর ক্ষেত্রে একজন প্রতারক ধোকাবাজি করেন অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা প্রদর্শন করে৷ এই ধরনের টেলিগ্রাম গ্রুপ মূলত ফেক একাউন্টে ভরা থাকে। এসব একাউন্ট থেকে আবার বিভিন্ন ফেইক প্রমাণ পোস্ট করা হয় বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে।

টেলিগ্রাম গ্রুপে ক্রিপটোকারেন্সির লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ক্ষেত্রে উইথড্র বা ক্লেইম এর নাম করে ওয়েবসাইট এর লিংক প্রদান করা হয়৷ আর এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে ডিভাইস হ্যাক হতে পারে বা ভাইরাস ঢুকতে পারে। আবার অনেক সময় ক্রিপটোকারেন্সি উইথড্র বা ট্রান্সফার এর কথা বলে ট্রান্সফার ফি বা উইথড্রয়াল ফি এর নাম করে অর্থ নিয়ে নেওয়া হয়।

[ ?] ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করার উপায়

Add Comment

Skip to toolbar