ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নতুনরা হয়ত অনেক জবেই অ্যাপ্লিকেশন করছেন কিন্তু কোন রিপ্লাই পাচ্ছেননা । অনেকের প্রশ্ন কেন জব পাচ্ছেন না, এর অন্যতম কারণ কি হতে পারে, এর থেকে সফল হওয়ার উপায় ইত্যাদি। জানলে একটু অবাক হবেন, সমীক্ষায় গিয়ে দেখে গেছে, পুরাতনদের তুলনায় নতুনদের অনেক অনেক কাজ পাওয়ার হার বেশি। একজলকে দেখে নিই সম্ভাব্য কি কি কারণে আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ পাচ্ছেন না।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হতে চান ? তাহলে, আল্টিমেট গাইডলাইন গুলো পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে
১। কাজ না পাওয়ার অন্যতম হলো —জব অ্যাপ্লিকেশন করার সময় কি কাজ করতে হবে তা সঠিকভাবে জেনে না নেওয়া।
২। জব ডিটেইল এ কিছু কিওয়ার্ড উল্লেখ করা থাকে যা আমরা সঠিকভাবে উত্তর না দিয়ে জব আপ্লিকেশন করি। যে কারনে ক্লায়েন্ট আর আপ্লিকেশনের উত্তর প্রদান করেন না।
৩। দেখা গেছে অনেকেই একই কভার লেটার বারবার কপি করে ব্যবহার করেন, যা নির্দিষ্ট জবের জন্য হয়তো অপ্রাসঙ্গিক। এবং জবের জন্য ক্লায়েন্টের নজর কারতে পারেনা।
৪। মাঝে মাঝে কিছু বায়ার জব ডিটেইলে বলে দেন আগের করা কোন কাজের স্যাম্পল কিংবা পোর্টফোলিও এটাচ করে দেয়ার জন্যে। সেক্ষেত্রে কভার লেটারের সাথে ফাইল এটাচ করে দিতে হয়। তবে অরিজিনাল ফাইল দেয়া থেকে বিরত থাকুন। আর পোর্টফোলিওগুলো আগে থেকেই সাজিয়ে রাখুন। কারণ কাজ পাবার ক্ষেত্রে পোর্টফোলিও অনেক ভাল ভূমিকা রাখে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি ? কি ভাবে শিখতে পারি।
৫। পোর্টপলিও ঃ আপনার যদি ভালো প্রোটফোলিও থাকে তাহলে কাজ পাবার সম্ভাবনা অনেক বেশি । সবসময় আপনি যে প্রজেক্ট এর কাজ শেষ করবেন তারপর তা আপডেট করে নিন ।
৬। কাজের রেট কমিয়ে বিড করছেন?
আচ্ছা, ধরুন দোকানে গিয়েছেন মাম পানির বোতল কিনতে; দোকানদার দাম হাকলেন ১৫ টাকা। আরেক দোকানে গিয়ে দেখলেন সেটি ১০টাকা। আপনি আগে থেকেই জানেন মাম পানির বাজারদর ১৫টাকা। এখন কোয়ালিটির কথা চিন্তা করলে কোনটি কিনবেন?৭। কাভার লেটার লেখার সময় অনেকে বানানের প্রতি খেয়াল রাখেন না। এটি কাজ না পাওয়ার অন্যতম আর একটি কারণ।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার কিছু কৌশল জেনে নিন।
অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সহজে কাজ পাওয়ার তেমনই কিছু কৌশল এখানে জানানো হলো।
১. প্রোফাইল তেরির সময়ই আপনার আগের করা ভালো কিছু কাজের স্যাম্পল জুড়ে দিতে পারেন। এগুলো দেখে বায়ার আপনার কাজের মান সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন।
২. আবেদন করার আগে অবশ্যই কি কাজ করতে হবে, বায়ার কি চায় সেটি ভালোভাবে দেখে নিবেন। বায়ারের সঙ্গে সাক্ষাতকালে অবশ্যই কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন। আপনি কিভাবে কাজটি সম্পন্ন করবেন সেটি জানাবেন ও একই ধরণের কাজ আগে করে থাকলে সেটি দেখাবেন।
ডোমেইন কেনা-বেচা করে আয় করতে পারেন অনেক টাকা।
৩. সবসময়ই কম মূল্যে আবেদন করলে কাজ পাবেন এমনটি নয়! কাজের ধরণ ও আপনার কাজের মান অনুযায়ী আবেদন করবেন। তবে প্রাথমিকভাবে কাজ পেতে উচ্চ রেটে আবেদন না করাই ভালো।
৪. বায়ারের আগের কাজগুলো দেখুন। তাহলে সেখান থেকে কাজের মূল্য সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন। ফিক্সড রেটের কাজ হলেতো সেটা জানার প্রয়োজন নেই।
৫. যেসব বায়ারের পেমেন্ট মেথড ভেরিফায়েড না সেসব বায়ারের কাজে আবেদন করবেন না। কারণ, কোনো কনট্রাক্টরকে ভাড়া বা হায়ার করতে হলে তার পেমেন্ট মেথড ভেরিফায়েড থাকতে হয়। পেমেন্ট মেথড ভেরিফায়েড না থাকা বায়ারের কাজ করলে প্রতারিত হতে পারেন।
৬. ঘন্টাভিত্তিক কাজের ক্ষেত্রে আপনি কখনোই আপনার নির্ধারিত রেটের নিচের রেট বলবেন না। তাহলে পরবর্তীতে বেশি রেটে কাজ পেতে অসুবিধা হতে পারে।
৭. জব পাবলিশ হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদন করা ভালো। এতে বায়ারের নজরে পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কি ধরনের ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করা ভালো হবে।
৮. যত বেশি সময় সম্ভব অনলাইনে থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ মার্কেটপ্লেসে কিছু কিছু কাজ কম সময়ের মধ্যে করার জন্য অনেকেই জব পোস্ট করে। তাই অনলাইনে থাকলে এগুলো আপনি ধরতে পারেন। এছাড়া আপনার আবেদন করা কাজের বায়ার কোনো মেসেজ দিলে কিংবা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আপনি দ্রুত তার উত্তর দিতে পারবেন।
৯. যেসব কাজে ফ্রিল্যান্সার/কনট্রাক্টরের সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে সেগুলোতে আবেদন না করাই ভালো। কারণ আপনার আবেদন করার আগেই যদি বায়ার কাঙ্খিত কনট্রাক্টর পেয়ে যান, তাহলে আপনার আবেদন চেক করবে না।
১০. কোনো কাজ ভালোভাবে না পারলে কিংবা না বুঝে আবেদন করবেন না। এতে আপনার পরবর্তীতে ভোগান্তি হবে ও খারাপ ফিডব্যাক পেতে পারেন।
কভার লেটার লেখার নিয়ম
আপনি যদি নিয়মিত বিড করে থাকেন, তারপর ও কোন কাজ না পান তাহলে আপনার কভার লেটার টা একটু অন্যরকম ভাবে লেখার চেষ্টা করুন। ক্লায়নেটের জাগায় আপনাকে চিন্তা করুন। কিভাবে একজন এপ্লাই করলে আপনি তাকে হারায় করতেন। আশাকরি কাজ হবে। সবাই চায় অভিজ্ঞতা। আপনার কভার লেটারে আপনি নিজে শেখার সময় যে কাজ গুলো করেছেন, সেগুলো দিতে পারেন।
কভার লেখার নিয়ম বলতে আসলে কিছু না। বিশাল একটা মেসেজের থেকে সিম্পল, সরাসরি কাজের কথা দিয়ে কভার লেটার লিখলে সহজেই ক্লায়েন্টের আকর্ষন পাওয়া যায়। জব পোস্টটি পড়বেন, এরপর ক্লায়েন্ট কি কোন প্রশ্ন করেছে কিনা, সে গুলো কভার লেটারে উল্ল্যেখ করবেন। আপনার কোন প্রশ্ন আছে কিনা, সে প্রশ্ন করবেন। আপনি কিভাবে কাজটি সম্পুর্ণ করবেন তা লিখবেন। কেন আপনি জবটি কমপ্লিট করতে পারবেন, তা লিখবেন। এভাবেই পারফেক্ট কভার লেটার লিখে ফেলতে পারবেন।। অন্য কাউকে ফলো না করে নিজের মনের থেকে যেটা লিখতে ইচ্ছে করবে তাই লিখবেন কভার লেটারে।
কিভাবে ফাইবারে সুন্দরভাবে গিগ তৈরি করতে পারি।
কাজ না করলে অভিজ্ঞতা কিভাবে হবে তাই না? যদি প্রথমে কেউই কাজ দিতে না চায়, তাহলে ফ্রী কাজ করার চেষ্টা করুন। নিচের লেখাটা দয়া করে পড়ুন।
কোনো একটা কাজ দেওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সেটিতে আবেদন করাঃ কোনো একটা কাজ দেওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সেটিতে আবেদন করবেন ততই ভালো। তবে আবেদন করার সময় কাভার লেটারটি এমনভাবে লিখবেন, যেন বায়ার বুঝতে পারে আপনি কাজটির বর্ণনা পড়েছেন এবং তা করতে পারবেন।
যত বেশি সম্ভব মার্কেটপ্লেসে সময় দেয়াঃ
আপনি যত বেশি মার্কেটপ্লেসে থাকবেন, ততই আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা। কারণ, কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলো মার্কেটপ্লেসে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে (এক-দুই ঘণ্টার মধ্যে) সম্পন্ন করে জমা দিতে হয়। যেমন ফেসবুকে বা অন্য কোনো সাইটে ভোট দেওয়া এবং কিছু ভোট সংগ্রহ করে দেওয়া বা হঠাৎ করে কোন ওয়েবসাইটে সমস্যা হয়েছে, তা ঠিক করে দেওয়া ইত্যাদি।
কাজেই শুরুতে বেশি সময় অনলাইনে থাকার চেষ্টা করুন, যাতে বায়ার আপনাকে কোনো বার্তা পাঠালে সঙ্গে সঙ্গেই আপনি তার জবাব দিতে পারেন। তাহলে বায়ার বুঝতে পারবে, আপনি কাজের প্রতি আন্তরিক।
যত দ্রুত সম্ভব জবে বিড করাঃ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে দেখবেন, প্রতি মিনিটে নতুন নতুন কাজ দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোতে আবেদন করুন। যেসব কাজে কোনো কনট্রাক্টরের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে, সেসবে আবেদন না করাই ভালো।
ফ্রিল্যান্সিং/আউটসোর্সিং ট্রেনিং সেন্টারগুলো যে ভাবে প্রতারণা করে।
শর্ত পূরণ করতে না পারলে বিড না করাঃ যেসব কাজে শর্ত দেওয়া রয়েছে, আর সেগুলো যদি আপনি পূরণ করতে না পারেন, তবে সেসব কাজে আবেদন না করাই ভালো।
কিছু নোটঃ ফ্রিল্যান্সিং যেকোনো মার্কেটেই কাজ করেন না কেন যদি দেখেন ক্লায়েন্টের পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড না, তাহলে সে যতই বলুক তারপরও তার কাজ করবেন না । কারণ, কাজ করার পরেই পেমেন্ট দিতে হয় । এখানে পরে দেয়ার কোন সিস্টেম নাই । আপনি যদি কারো কাজ করে দেন তাহলে সে আপনাকে পেমেন্ট দিতেও পারবে না যদি তার পেমেন্ট ভেরিফাই না থাকে । আর পেমেন্ট ভেরিফাই কিনা দেখতে আপনি তার প্রোফাইলে চলে যান তাহলেই দেখতে পারবেন কিংবা প্রোজেক্টেই দেখতে পারবেন পেমেন্ট ভেরিফাই রয়েছে কি না।
আজকে একজন ভাই পেমেন্ট ভেরিফাই না থাকার কারণে পেমেন্ট নিতে পারেন নাই । ক্লায়েন্টের আইডিও ব্লকড ফ্রিল্যান্সার থেকে । সিঙ্গাপুরের একজন ক্লায়েন্টের কাজ করেছেন গত চারদিন ধরে । এটা তার প্রথম প্রোজেক্ট ছিল । কিন্তু বেচারা ধরা খেলো । তাই আপনারা সতর্ক হউন । কাজ অনেক পাবেন । যেহেতু আপনারা টাকার জন্যই কাজ করবেন তাই পেমেন্ট ভেরিফাই কিনা সেটা সবার আগে দেখবেন ।
ক্লায়েন্ট পাবার গোপন রহস্যঃ
ক্লায়েন্ট পাবার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো কারো রেফারেন্সে কাজ পাওয়া। চমৎকার একটা প্রোফাইল প্রস্তুত করে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে থাকতে হবে প্রথম কাজ পাবার জন্যে। এখানেই ধৈর্যের আসল পরীক্ষা শুরু। অনেক অপেক্ষার পর একটা কাজ হাতে পেলে সেটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিখুতভাবে শেষ করতে হবে। এতে ক্লায়েন্ট খুশি হয়ে হয়তো পরের কাজটিও আপনাকে দিয়ে দেবে, কিংবা অন্যের কাছে রেফারেন্স করবে আপনার নাম। এভাবেই ফ্রিল্যান্স জগতে আপনি হতে পারবেন পরিচিত মুখ।
এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।