ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিকাশের চমক আসছে, কিন্তু কী?

বিকাশ শব্দটি এক সময় বহুল ব্যবহৃত হত হরলিক্সের মত পণ্যের বিজ্ঞাপনে- “মানসিক বিকাশ’, “শারীরিক বিকাশ”, “হাড়ের বিকাশ” এ ধরনের কথার সাথে। কিন্তু বর্তমানে “বিকাশ” শুনলেই মনে ভেসে আসে গোলাপি রঙের সেই কাগজের পাখি, অর্থাৎ বিকাশ সেবার লোগোটি! বাংলাদেশে আর্থিক সেবা ও অর্থ আদানপ্রদানে রীতিমত বিপ্লব এনে দিয়েছে বিকাশ।

লোকজন এখন “বিকাশ করা” বলতে টাকা পাঠানো বোঝায়। “গুগল করা” বলতে যেমন গুগলে সার্চ করা বোঝায়, তেমনি “বিকাশ করা” বলতে বিকাশে টাকা পাঠানো বোঝায়। কোম্পানিটির নাম বিশেষ্য পদ থেকে এখন প্রায় ক্ষেত্রেই একটি ক্রিয়াপদ হয়ে গিয়েছে। (একটু ‘বুকিশ’ হয়ে গেল?)

সম্প্রতি বিকাশ একটি ইভেন্ট শিডিউল করেছে যেখানে তারা বলছে বিকাশ ফ্রিল্যান্সারদের টাকা আনার গতি “সুপার ফাস্ট” করে দেয়ার সেবা নিয়ে আসবে। ইভেন্টটি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে দেশের অনলাইন পেশাজীবীদের মধ্যে ব্যাপক জল্পনাকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কী হবে এই সেবা?

কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইনে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে আনলে ৪% প্রণোদনা দেয়ার কথা ঘোষিত হয়েছে। তখনও অনেকে বলছিলেন বিদেশ থেকে দেশে টাকা আনার ক্ষেত্রে কিছু কিছু মাধ্যমে কয়েকদিন সময় লেগে যায়। এছাড়া অনেক মাধ্যমে লেনদেন খরচও তুলনামূলক বেশি। এরই মধ্যে বিকাশ এই নতুন সেবা নিয়ে আসার ঘোষণা দিল।

বিকাশ ঠিক কীভাবে ফ্রিল্যান্সারদের দেশে টাকা আনার গতি দ্রুততর করবে তা এখনো জানা যায়নি। সেটা তাদের ইভেন্টের জন্যই চমক হিসেবে থাকছে। তবে অনুমান করা যায় যে, বিকাশ হয়ত সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু মার্কেটপ্লেস এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশে টাকা আনার বিষয়টি সহজ করে দেবে।

উদাহরণস্বরূপ, বিকাশ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপওয়ার্ক ও ফাইভারের সাথে ন্যাটিভ ইন্টিগ্রেশন অফার করতে পারে। এর ফলে আপওয়ার্ক ও ফাইভার থেকে বিকাশের মাধ্যমে সরাসরি পেমেন্ট আনা যেতে পারে।

অনলাইনে আয়ের ওপর ৪% প্রণোদনা পাবেন ফ্রিল্যান্সার ও পেশাজীবীরা!

এছাড়া বিভিন্ন মনিটাইজেশন প্ল্যাটফর্মের সাথেও বিকাশ হয়ত কোনোভাবে সমঝোতার মাধ্যমে পাবলিশারদের টাকা দ্রুততম সময়ে দেশে আনার সেবা দিতে পারে। এছাড়া পেওনিয়ার থেকে বিকাশে সহজে কম খরচে টাকা তোলার কোনো সেবাও আসতে পারে। এগুলো সবই সম্ভাবনামাত্র। কোনটাই অফিসিয়াল বা নিশ্চিত না।

বিকাশ আরেকটি কাজ করতে পারে। ভার্চুয়াল বাংলাদেশি কিংবা ইউএস ব্যাংক একাউন্ট সেবা দিলে বিকাশ গ্রাহকরা সেই ভার্চুয়াল ব্যাংক একাউন্টে ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্ম থেকে টাকা পাঠাতে পারে যা সরাসরি বিকাশ একাউন্ট থেকে তোলা যাবে। এটাও সম্পূর্ন কাল্পনিক।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

পেওনিয়ার এবং ওয়াইজ এরকম ভার্চুয়াল ব্যাংকের সেবা দিচ্ছে। ওয়াইজ থেকে অবশ্য বিকাশে টাকা ইতোমধ্যেই পাঠানো যায়। সাধারণত কয়েক মিনিট লাগে টাকা আসতে। বিকাশ আসলে কী সেবা দিবে সেটা জানা যাবে তাদের ইভেন্ট থেকে।

তবে এই মুহুর্তে বিকাশ যদি কোনোভাবে পেপাল থেকে টাকা রিসিভ করার কোনো সেবা আনতে পারে, সেটা হবে বিশাল এক বিপ্লব। বাংলাদেশে পেপালের সেবা নেই। বিকাশ যদি কোনো পার্টনারের সাথে কাজ করে গ্রাহকদের একটি মাধ্যম দিতে পারে যেটাতে পেপাল থেকে অর্থ গ্রহণ করা যাবে, সেটা হবে যুগান্তকারি এক ব্যাপার। যদিও এটা আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছেনা, তাও বললাম আরকি!

বিকাশ কি বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের অন্যতম চাওয়া, পেপালের অভাব পূরণ করতে পারবে? একটু বেশি প্রত্যাশা হয়ে গেল? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। আপডেট জানার জন্য বাংলাটেক এর সাথেই থাকুন!

আপনার কী মনে হয়? জানাতে পারেন কমেন্টে!

Add Comment

Skip to toolbar