কাজ পাওয়ার টিপস (A to Z ফ্রিল্যান্সিং পর্ব – ৬)

কাজ পাওয়ার টিপসঃ

প্রাথমিক অবস্থাতে যেকোনো মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়া একটু কষ্টকর সেই ক্ষেত্রে কিছু টিপস জেনে রাখা দরকার।। আমার রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স থেকে আমি ব্যাপারটা শেয়ার করছি।।কাজ পাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যয় আপনার স্কিলের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।।আর বর্তমানে সব মারকেটপ্লেসে কম্পিটিটর অনেক বেশি তাই আপনাকে তাদের থেকে সব কিছু থেকে একটু বেশি স্মার্টনেস দেখাতে হবে।।আপনি যে কাজটি পারবেন সেই কাজেই বিড করবেন অযথা এমন কোন কাজে বিড করবেন না যেইটা আপনি করতে পারবেন না।।মার্কেটপ্লেসের জব ফিড থেকে এমন একটা জব সিলেক্ট করুন যেইটা আপনার স্কিলের সাথে মিলে গেছে কিংবা আপনি সুনিশ্চিত যে আপনি কাজটা খুব দ্রুত এবং ইউনিক ভাবে করতে পারবেন।।

ধরে নিলাম এমন একটা জব পেয়েছেন যেইটাতে আপনি সুদক্ষ,ক্লায়েন্ট আপনাকে দেওয়া মাত্র আপনি কাজটা করে দিতে পারবেন।।জব সিলেক্ট করার আগে ক্লায়েন্টের প্রোফাইলটা একটু ভাল করে দেখে নিবেন যে ক্লায়েন্টের কোন ঝামেলা আছে নাকি! ভেরিফাইড নাকি! আগের জব গুলাতে ভাল ভাবে ঠিক ঠাক মত পে করেছে নাকি! এগুলা দেখে নেবেন যেন কোন চাপাচাপি না করতে পারে।।সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জবের ডিস্ক্রিপ্সশন্টা ভাল ভাবে পড়ে নিন, সবসময় বুঝার চেস্টা করুন ক্লায়েন্ট কি চাচ্ছে,সব না বুঝে বীড করবেন না।।প্রয়োজনে ইংরেজি ভালো না বুঝলে গুগোল ট্রান্সলেটর ব্যাবহার করে বাংলা করে তার চাওয়া বুঝে নিন।।সবকিছু ভালভাবে বুঝতে পারলে আপনার প্রথম ধাপ শেষ।। এবার তাকে কভার লেটার পাঠাতে হবে অর্থাৎ জবের জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে।।

আবেদনের নিয়মাবলিঃ

একেক মার্কেটপ্লেসে একেক ভাবে জবের জন্য আবেদন করতে হয়,আবেদন করার নিয়মাবলি আপনার মার্কেটপ্লেস অনুযায়ী গুগোল সার্চ দিয়ে শিখে নিন।।

  1. খুব বিনয়ের সাথে আপনার কভার লেটার কিংবা আবেদন পত্র কিখা শুরু করে দিন,Dear Hiring Manager,Dear Sir,এগুলা পত্রের শুরুতে লিখে আবেদন করতে পারেন,
  2. আপনি তারপরে তাকে আপনার স্কিল সম্পর্কে তাকে বুঝান যে আপনি দক্ষ একজন ফ্রিলেন্সার,এটা খুব বেশি দীর্ঘ করবেন না
  3. তারপর তার জব ডিস্ক্রিপ্সশন অনুযায়ী তাকে বুঝান যে সে যা চাচ্ছে আপনি তা করতে পারবেন
  4. তাকে একটু সময়ের চেয়ে দ্রুত কাজ শেষ করে দেওার প্রত্যয় নিবেন
  5. তাকে বুঝান যে সে যা চাচ্ছে তা খুব সহজেই এবং খুব ভালভাবে তার কাজটা করে দিতে পারবেন
  6. টাকার পরিমান সে যা দিতে চাবে তার তুলনায় একটু কম দিয়ে বিড করবেন
  7. সে যা চাচ্ছে তা আপনি করে দিতে পারবেন এটা যদি আপনি বুঝাতে পারেন তাহলে অনেকাংশে আপনার ভাগ্যেই কাজটা পরতে পারে।।
  8. সে যা চাচ্ছে তেমন যদি কাজ আপনার আগে শিখার সময় করা কোন পোর্টফোলিও থেকে থাকে তাহলে তাকে সেইটা দেখান যে দেখুন এর আগেও এমন কাজ আমি করেছি এটা যদি দেখাতে পারেন তাহলে কাজটা আপনি পেয়ে গেছেন মনে করেন।।
  9. তারপর বিনিয়ের সাথে তাকে জানান আপনি তার প্ল্যানকে সফল করতে তাকে সাহায্য করবেন সবসময়
  10. তারপর বিনয়ের সাথে আপনার লেটার সমাপ্ত করবেন(যত খানি সম্ভব লেটার ছোট করার ট্রাই করবেন।।

এখন অপেক্ষা করুন সে যখনি আপনাকে নক করবে সাথে সাথে তার রিপ্লাই দেওয়ার ট্রাই করবেন।।তার সাথে আলোচনা করে সবকিছু বুঝিয়ে দিন যে আপনি কাজটা করতে সক্ষম।।সবকিছু ঠিক ঠাক মত করতে পারলে আপনি কাজটা পেয়ে যাবেন।। এবার আপনার পালা তার কাজটা খুব ভালোভাবে করে ফেলা।। তার সাথে আপনি নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারেন তাকে পটানোর দায়িত্ব এখন আপনার।। তার থেকে কাজ শেষে একটা ভালো ফিডব্যাক নিবেন যা আপনার পরবর্তী কাজ পেতে খুব বেশি সাহায্য করবে।। আপনার প্রোফাইল টা সব সময় ১০০% কমপ্লিট রাখবেন যেগুলা পরিক্ষা দিতে হবে আপনার স্কিল অনুযায়ী পরিক্ষা গুলা দিয়ে নিন।।সব মিলিয়ে যাবতীয় ভাবে আপনার স্মারটনেস ফুটিয়ে তুলুন সবার কাছে।।যত কাজ করবেন সব কাজ আপনার পোর্টফোলিও হিসাবে আপনার প্রফাইলে রাখবেন।। যেন ক্লায়েন্ট আপনার প্রফাইল দেখেই মনে করে যে এই ফ্রিলান্সারের প্রতি আমি আস্থা পাচ্ছি।।এবার দেখুন আপনি কোন অবস্থানে চলে যান।।

ফ্রিল্যান্সিং এ কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌছানোর তিনটি মূল মন্ত্র…

“ফ্রিল্যান্সিং” ইদানীং কালের ইন্টারনেট ইউজারদের জন্য একটা হট টপিক, বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোর জন্য। গত কিছুদিন যাবত ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক বিভিন্ন জরিপে আমাদের দেশ – এর বেশ অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষের জন্যে এটি সৌভাগ্য যে আমরা এখন দেশে বসেই অন্য দেশের কাজ করে নিজেদের প্রয়োজনীয় টাকা আয় করতে পারছি, যদিও সবাই এ বিষয়ে সফল না। সফল না হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ গুলোর মধ্যে ইংরেজি কম জানা, ধৈর্য না থাকা, রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাওয়ার চিন্তা(!!), নিজের ক্ষমতার বাইরের কাজ করতে চাওয়া(যে কাজ পারবেনা সেই কাজ করতে যাওয়া), কোন বিষয়ে শক্ত ভিত্তি নেই তবুও সে কাজ করতে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম।

তবে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার চিন্তাটা কেমন যেন বোকা টাইপের চিন্তাভাবনা, বাহিরের দেশের মানুষরা(উন্নত) অন্য দেশের মানুষকে(তুলনামূলক কম উন্নত) দিয়ে কাজ করাচ্ছে তাদের ব্যয় কমানোর জন্য। তারা কারো জন্য টাকার বস্তা নিয়ে বসে নেই, এক কাজে একাধিক মানুষ আবেদন করবে সেটাই স্বাভাবিক, আর এর মধ্যে আপনাকে ভেঙ্গে না পড়ে নিজের সেরাটুকু দিয়ে যান, সব কাজ যে আপনি পাবেন এমটি ভেবে বসবেন না। ভালো ভালো ফ্রিল্যান্সাররাও অনেক গুলো কাজে আবেদন করে খুব অল্প সংখ্যকই কাজ পায়। আপনি প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজেক্টে আবেদন করুন, ভালো কাজ পারলে এবং যে কাজ দিয়েছে তাকে বিভিন্ন স্যাম্পল দেখিয়ে এবং ভালো ব্যবহার করে যদি আকৃষ্ট করতে পারেন তবেই আপনি কাজ পাবেন, তাছাড়া পাবেন না। মাসে মাত্র ৪-৫টা ভালো মানের কাজ করতে পারলেই কিন্তু আর কাজ করার প্রয়োজন হয় না।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে কোন লক্ষ্য ঠিক না করেন তবে আপনি সফল হতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক, এর ব্যতিক্রমও যদি হয়ে থাকে তবে সেটা হবে কাকতালীয়। একজন ভ্রমণকারীকে যেমন ঠিক করতে হয় কোথায় ভ্রমণ করবেন অর্থাৎ তার গন্তব্য কোথায় অনেকটা তেমনি একজন ফ্রিল্যান্সারকেও ঠিক করতে হবে তার গন্তব্য কোথায়।

অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সারই বোঝেন যে ফ্রিল্যান্সিং এ নির্দিষ্ট লক্ষ বা গন্তব্য থাকা আবশ্যক। কিন্তু অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সারই যেটা বোঝেন না বা বুঝেও করেন না সেটা হলো কিভাবে গন্তব্য তৈরি করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌছতে হবে।

নিজের ফ্রিল্যান্সিং লক্ষ্য তথা গন্তব্য খুব সহজ ভাবেই সেট করা এবং সেটা কায়েম করা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ইচ্ছাশক্তি, দক্ষতা আর লক্ষে পৌঁছানোর জন্যে মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছানো সম্ভব। যা কিনা যেকোনো ফ্রিল্যান্সারকে আরো একটিভ এবং সফল করে তুলতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং এ কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছানোর তিনটি মূল মন্ত্র তথা ধাপ তুলে ধরা হল:

প্রথম ধাপ: ফ্রিল্যান্সিং এ আপনার নিজস্ব লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিন…

আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই, লক্ষে পৌঁছানোর জন্যে লক্ষ নির্ধারণই প্রথম মন্ত্র। আপনি কখনোই কোন লক্ষের দেখা পাবেন না যদি না আপনার নিজস্ব কোন লক্ষ থেকে থাকে। তাই নিজের লক্ষ নির্ধারণই আপনার প্রথম কাজ। লক্ষ নির্ধারণ করুন, এক্ষেত্রে আপনাকে রিয়েলিস্টিক এবং সৎ হতে হবে। যা চান ঠিক সেদিকেই আগাবেন, এর অন্যথা করবেন না। লক্ষ পূরণের মাঝপথে থেমে গেলে মনোবল নষ্ট হবে। তাই ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা ভাবনা করুন, ফ্রিল্যান্সিং এ আপনার উদ্দেশ্য কি এবং লক্ষ কি। আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ কতদুর এগোতে চান এর উপর নির্ভর করে আপনার লক্ষ সিলেক্ট করুন। লক্ষ নির্ধারণের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন:

১.নিজের যোগ্যতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে লক্ষ নির্ধারণ করুন। ফ্রিল্যান্সিং এ যোগ্যতাই সব। যোগ্যতা না থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করা কোন মতেই উচিত হবে না।

২.নিজের সাধ্যমত লক্ষ নির্ধারণ করুন। সফলতা না পেলে ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সিং এ নেমে পড়া কারও জন্যে সমীচীন নয়। তাই দিনে কতটুকু সময় আপনি আপনার লক্ষ পূরণে ব্যয় করতে পারবেন আর কোন কোন সময় আপনি পুরোপুরি লক্ষ পূরণে দিতে পারবেন সেটার উপর ভিত্তি করে লক্ষ নির্ধারণ করুন। মনে করুন, আপনি চাচ্ছেন শুধুমাত্র বড় বড় কাজ গুলো করতে যা করতে আপনাকে দিনে ১০-১২ ঘণ্টা ব্যয় করতে হবে।কিন্তু একজন ছাত্র, চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীর জন্যে ১০-১২ ঘণ্টা ম্যাসেজ করা বেশ কঠিন ব্যাপার। তাও প্রতিদিনই সময় দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তাই আপনি সাধ্যমত যতটুকু সময় ব্যয় করতে পারবেন তার উপর ভিত্তি করে লক্ষ নির্ধারণ করুন

অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সার যারা নিজেদের লক্ষ নির্ধারণ করে ফেলেছেন তাদের মধ্যে বেশ সামঞ্জস্য রয়েছে। বলা যায় তারা অনেকটা একই রকম লক্ষ নির্ধারণ করে। নিচে বেশ কিছু কমন লক্ষ দেয়া হল:

  • আমার ইনকাম বা আয় X টাকা পর্যন্ত করতে হবে।
  • নিজেকে এবং নিজের সংসারকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিতে হবে, এজন্যে প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করতে হবে।
  • প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে X ঘণ্টা সময় দিতে হবে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে।
  • ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি নিজের পারসোনাল লাইফের জন্যে কম করে হলেও X ঘণ্টা সময় হাতে রাখতে হবে।
  • ফুল-টাইম ফ্রিল্যান্সার হবো এবং নিজের একটা ব্র্যান্ড তৈরি করবো।
  • X জনে ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করতে হবে, যাদের থেকে নিয়মিত কাজ পাবো।
  • X সংখ্যক কাজ প্রতি মাসে করতে হবে।
  • ভালো একটা ফ্রিল্যান্সিং টিপ তৈরি করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ: নির্ধারণ করে নিন কি কি লাগবে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ তথা সোনার হরিণ পেতে…

আপনি হয়তো একটি বা একাধিক লক্ষ নির্ধারণ করে ফেলছেন যে লক্ষে আপনাকে পৌছুতেই হবে। এবার ক্যালকুলেট করে ফেলুন আপনাকে কি কি করতে হবে লক্ষে পৌছুতে। কখনোই সহজ পথে এগোবেন না, ফ্রিল্যান্সিং এ অল্প বিদ্যা প্রয়োগ করতে গেলে কখনোই মহৎ কিছু সম্ভব না। তাই আপনার লক্ষে পৌছুতে যা যা দরকার ঠিক তেমন ভাবে সঠিক ও মোক্ষম পথে আগান। ধরে নিলাম আপনার লক্ষ আপনি ফ্রিল্যান্স রাইটার হতে চাচ্ছেন। তো এজন্য প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে কি কি বিষয় আপনার জানা বাধ্যতামূলক, কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে ফ্রিল্যান্স রাইটার হওয়ার কিছু টিপস দেয়া হলোঃ

১.ফ্রিল্যান্স রাইটারদের কাজ হলো শুধু আর্টিকেল রাইটিং, ব্লগ রাইটিং, কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, আর্টিকেল রিরাইট, বই লেখা ইত্যাদি, তারা অন্য কাজও করতে পারে, তবে যারা প্রফেশনাল তারা একটি বিভাগেই কাজ করে। ফ্রিল্যান্স রাইটার হতে হলে সবার আগে আপনাকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে, ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা না থাকলে ফ্রিল্যান্স রাইটার হতে পারবেন না।

২.ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরুর আগেই নিজেকে ঝালিয়ে নিতে হবে, প্রথমে নিজে নিজেই টপিক বের করে লেখা শুরু করুন, প্রথমে সহজ বিষয়ে লিখুন, পরবর্তীতে নিজেকে কঠিন কঠিন বিষয়ে লেখার জন্য চ্যালেঞ্জ করুন, এতে আপনার দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৩.লেখার সময় গ্রামারের প্রতি বিশেষ নজর দিবেন, নিজের পক্ষে অনেক সময় নিজের ভুল ধরা সম্ভব নাও হতে পারে,তাই বিভিন্ন গ্রামার চেকার টুল আছে, সেগুলো দিয়ে গ্রামার চেক করাতে পারেন।

৪.প্রতিদিন কম করে হলেও ১০টি শব্দ শিখবেন ডিকশনারি থেকে, এতে আপনার শব্দের ভাণ্ডার বাড়বে।

৫.ভালো মানের লেখকদের বই এবং ভালো ব্লগারদের বই নিয়মিত পড়ুন, এতে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান বাড়বে।

৬.আপনি যদি সাইড প্রফেশন হিসেবে ফ্রিল্যান্স রাইটিং কে নিতে চান তবে বড় প্রজেক্টে (৫০০ আর্টিকেল বা তারও বেশি) কাজ করবেন না। এতে যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারার ঝুঁকি থাকে, সাধারণত ছোটখাটো প্রজেক্ট যেমন ৫-১০০ আরটিকেলের কাজ করবেন, আপনি কতদিনে শেষ করতে পারবেন তা নিজে প্ল্যান করে নিয়ে তারপর আবেদন করবেন।

৭.প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার যারা তারা সাধারণত বড় প্রজেক্ট গ্রুপে করেন, মানে কয়েকজন মিলে করেন এতে বেশ সুবিধা পাওয়া যায়।

৮.কখনোই এমনটি ভাববেন না যে আপনি কপে পেস্ট করে আর্টিকেল জমা দিবেন আর তারা এর জন্য আপনাকে টাকা দিবে। যদি কপি পেস্ট আর্টিকেলেরই তাদের প্রয়োজন হত তবে তারা নিজেরাই কপি করে নিত, আপনাকে টাকা দিয়ে কপি পেস্ট নিশ্চয়ই করাবেনা তারা 😉

৯.আর্টিকেল যদি ইউনিক চায়, তবে কখনোই কোন ধরনের সফটওয়্যার বা ট্রান্সলেটরের সাহায্যে রিরাইট করে সেটাকে ইউনিক বানাবেন না, কারণ এতে লেখা ইউনিক তো দূরে থাক, লেখার আগা মাথা কিছুই থাকে না, সেরকম লেখা গ্রহণযোগ্য না, কারণ এতে লেখার ভাশাগত ত্রুটি, শাব্দিক ত্রুটি সহ নানা ভুল থাকবে। সুতরাং যারা এ জাতীয় মনোভাব পোষণ করেন যে আরটিকেল রিরাইট করে দিবেন তারা মনোভাব সংশোধন করুন।

১০.আর্টিকেল রিরাইট করার কোন প্রজেক্ট পেলে সেটা ম্যানুয়ালি করবেন, কোন সফটওয়্যার বা ট্রান্সলেটর ব্যবহার করবেন না, যদি করেন তাহলে টাকা হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা ০.০০%। আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন।

১১.সবসময় কোন নির্দিষ্ট ধরণের লেখার কাজ করার চেষ্টা করবেন, অনেকেই ভাবেন যে সব লেখা একই রকম, কিন্তু তা ভুল। অনেকে তাদের নিজস্ব ব্লগের জন্য লেখা চায়, অনেকে প্রিন্ট ম্যাগাজিনে দেয়ার জন্য লেখা চায়, অনেকে বই লেখার জন্য লেখা চায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই লেখার মান, কোয়ালিটি এবং স্টাইল ভিন্ন ভিন্ন, তাদের যে যেভাবে যার জন্য লেখা চায় সেভাবেই লিখতে হবে।

১২.আবেদনের পূর্বে যে বিষয়ের আর্টিকেল রাইটিং এর আবেদন করেছে তার একটা ভালো মানের ইউনিকিউ স্যাম্পল দিয়ে দিন, কখনোই ভুলে করে হলেও স্যাম্পল দেখার জন্য কোন ওয়েবসাইটে যাওয়ার আবেদন করবেন না, এমনটি করলে, কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়, তবে আপনার যদি কোন পোর্টফলিও ওয়েবসাইট থাকে (যা কিনা সকল প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটারেরই রয়েছে) তবে সেটাতে যাওয়ার জন্য বলতে পারেন, নিজের পোর্টফলিও ছাড়া অন্য কোন কিছুর লিঙ্ক দিবেন না।

১৩.নিজেকে কখনোই তুচ্ছ মনে করবেন না, আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীরা যত ভালো মানের লেখকই হন না কেন নিজেকে সবসময় তাদের সমকক্ষ মনে করবেন। কারণ তারাও এক সময় আপনার মতই ছিল, ধীরে ধীরে তারা উন্নতি করেছেন।

১৪.নিজেকে লেখার মাঝে উদার করে দিবেন, ভালো মানের লেখা পেলে একি বায়ারের কাজ থেকে পরবর্তীতে আরো কাজ পেতে পারেন।

১৫.কোন কাজ পেলে সেটাকে নিয়ে অবহেলা করবেন না, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আপনার কাজ শেষ করে সেটাকে প্রুফ-রিড করুন অথবা গ্রামার চেকার এবং স্পেল চেকার দিয়ে লেখার ভুল সংশোধন করুন।

১৬.অনেক সময় কঠিন বিষয়ে লেখতে হতে পারে, তখন আপনার উচিত সে বিষয়ে কিছুটা পড়ালেখা করে নেয়া, এতে লেখতে সুবিধা হবে, যে বিষয়ে লিখবেন সে বিষয়ে কোন ধারণা না থাকলে কখনোই ভালো লিখতে পারবেন না। তাই যে বিষয়ে লিখবেন সে বিষয়ের বিভিন্ন ফোরাম এবং ব্লগ ভিজিট করুন এবং পড়ুন, এতে আপনার ধারণা ক্লিয়ার হবে।

১৭.কখনোই লেখার মাঝে নিজের মতামত তুলে ধরবেন না। যেমন ধরুন আপনি এমন প্রজেক্ট পেয়েছেন যেঁটাতে বলা হল মাইকেল জ্যাকসনকে নিয়ে লিখতে, কিন্তু আপনি মাইকেল জ্যাকসনকে পছন্দ করেন না 😉 আর সে কারণে যদি আপনি আপনার লেখার নিজের মতামত তুলে ধরেন যে আমি তাকে পছন্দ করি না, সে এই করসে, সেই করসে, তাহলে কিন্তু আপনার প্রজেক্ট গ্রহণযোগ্য হবে না, তাই লেখার সময় পক্ষপাতিত্ব করবেন না।

১৮.ছোটখাটো প্রজেক্ট হলে যেমনঃ ১০০০-২০০০ শব্দের লেখা হলে, এবং কোন জরুরী বিষয়ে লেখা হলে আগে খাতায় খসড়া করে নিয়ে পড়ে টাইপ করবেন।

অর্থাৎ মূল কথা হলো আপনি যে লক্ষে পৌছুতে চাচ্ছেন সে লক্ষ অর্জন করতে আপনাকে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে কিভাবে এগিয়ে যেতে হবে এবং কি করতে হবে সেটা নির্ধারণ করুন। আবারও বলছি শর্টকাট পথে এগোবেন না, এটা নিজের পায়ে নিজেই কুড়োল মারার সমান। সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়ে সঠিক পথে আগানোর জন্যে কি কি করা উচিত এবং করতে হবে তা ঠিক করে ফেলুন। ধরে নিলাম আপনি সেটা করে ফেলেছেন, এবার পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাক।

তৃতীয় ধাপ: লক্ষ পূরণে করণীয় কাজগুলো সম্পাদন করুন…

আপনার ফাইনাল ধাপ এটাই, আপনার লক্ষে পৌছুতে যা যা করতে হবে সেগুলোকে বাস্তবতায় রূপ দিতে হবে, অর্থাৎ আপনাকে একশন নিতে হবে। অনেকেই হয়তো জানেন কি করতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে কিন্তু কখনোই করার চেষ্টা করেন নি, তাই সফলতার মুখ দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই দরকারি পদক্ষেপগুলো হাতে নিতে হবে।

সবচেয়ে ভালো হয় আপনি নির্দিষ্ট একটা সময় ঠিক করে ফেলুন আপনার লক্ষ পূরণের জন্যে। পরিমাণ মতোই সময় সিলেক্ট করবেন। সময় সিলেক্ট করা হয়ে গেলে কাজে নেমে পড়ুন, ঢিলেমির রেশও যেন না থাকে। সবসময়ই আপনাকে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার জন্যে। শিডিউল ছাড়া কাজ করলে সেটা সময় মত না হওয়াটাই স্বাভাবিক, তাই আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার জন্যে শিডিউল তৈরি করে নিতে হবে। শিডিউল মোতাবেক কাজ করতে হবে এবং কাজ সম্পাদন না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে বদ্ধপরিকর-ভাবে।

আপনি নিজেই নিজেকে কিছু প্রশ্ন নিয়মিত করতে পারেন, অথবা এমন কোন স্থানে লিখে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন যেখানে আপনি সচরাচর থাকেন (যেমনঃআপনার কম্পিউটারের আশেপাশে)। নিজেকে যে প্রশ্নগুলো করতে পারেন:

  • আমি কি আমার লক্ষ পূরণের জন্যে সঠিক পথে এগোচ্ছি?
  • আমার আগানোর গতি কি আমাকে সময় মত লক্ষে পৌঁছে দিতে সক্ষম?
  • আমি লক্ষের কতটা কাছাকাছি এসেছি?
  • আমার লক্ষ কি আসলেই আমার জন্যে মানানসই নাকি আমাকে নতুন লক্ষ সিলেক্ট করতে হবে?
  • আমাকে লক্ষে পৌঁছানোর জন্যে আর কি করার আছে?

সাবধানঃ

সফলতা ব্যাপারটা আপেক্ষিক, কারো কারো মতে সফলতার মূল মাপকাঠি হচ্ছে টাকা, আবার কারো কারো কাছে ভিন্ন কিছু। এটাকে খুব সহজে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন কাজ। তবে আমার মতে, আপনি যা করতে চাচ্ছেন তা করতে পারাই হচ্ছে সফলতা। ধরুন আমি চাচ্ছি সফলতার উপরে একটা ব্লগ পোষ্ট লিখবো, এবং আমি যদি তা লিখতে পারি তাহলে আমি সফল। আমি যদি চাই একটা ব্লগ পোষ্ট লিখবো এবং এই ব্লগ পোষ্টটি অনেক মানুষ পড়বে এবং শেয়ার করবে, কিন্তু লিখার পর দেখা গেল তেমন কেউ পড়ছেও না শেয়ারও করছে না, তাহলে আমি সফল নই।

প্রফেশনাল ক্যারিয়ার এর ক্ষেত্রেও সফলতার সংজ্ঞা অনেকটা একই রকম। তবে এই ক্ষেত্রে মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবেই হোক আর অনিচ্ছাকৃত ভাবেই হোক,  উপার্জন অথবা টাকার একটা যোগসূত্র ঠিকই তৈরি করে ফেলে। আর এই যোগসূত্রটাকে পুরাপুরি অযৌক্তিক বলাটাও ভুল হবে, হয়ত সফল হবার জন্য অনেক টাকার দরকার নেই, তবে আর্থিক সচ্ছলতা তো অবশ্যই দরকার।

বাকি সবার মত একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্যও সফল হবার রাস্তাটা সহজ নয়, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা আরো কঠিন, কারন এখানে কম্পিটিশন এর মাত্রাটা অতিমাত্রায় বেশি। তাই যারা ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত হবার কথা ভাবছেন তারা নিচের পয়েন্ট গুলো দেখে নিতে পারেন। এই স্বভাব গুলো যদি আপনার মধ্যে বিদ্যমান থেকে থাকে তাহলে আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সিং এ সফল ক্যারিয়ার গড়া তুলনামুলক ভাবে কষ্টকর হবে।

০১#    পর্যাপ্ত ধৈর্য না থাকা
০২#    নতুন জিনিস শেখার প্রতি আগ্রহের ঘাটতি
০৩#    কম্পিউটার এর সামনে বেশিক্ষন বসে থাকলে বিরক্ত হওয়া
০৪#    সোস্যাল মিডিয়ার প্রতি অতিরিক্ত বেশি অথবা অতিমাত্রায় কম আসক্তি থাকা
০৫#    অতিমাত্রাতে শর্টকাট খোজা
০৬#    প্রতিযোগিতাকে ভয় পাওয়া
০৭#    সময়ের কাজ সময়ে শেষ না করার বদ অভ্যাস
০৮#    বিভিন্ন টুলস ব্যাবহার করার প্রতি অনাগ্রহ
০৯#    একই সময়ে একের অধিক কাজ করা এবং একাধিক জায়গায় মননিবেশ করতে না পারা
১০#   বুঝানোর এবং বুঝতে পারার অদক্ষতা
১১#   নেটওয়ার্কিং এবং রিলেশনশিপ গঠনে অদক্ষতা।

আপনি কোন ক্ষেত্রে কাজ করছেন তার উপর নির্ভর করে কিছু অতিরিক্ত দক্ষতার প্রয়োজন হবে, কারন প্রতিটি ক্ষেত্রই একটি অন্যটির চেয়ে আলাদা, তাই তাদের কাজ করার ধরন, সুবিধা অসুবিধা এক রকম হবে না। তবে উপরে প্রদত্ত এই এগারোটি পয়েন্ট মোটামুটি সব ক্ষেত্রের জন্যই প্রযোজ্য।

তাই ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার শুরু করার আগে যাচাই করে নিন, কোন কোন জায়গাতে আপনার কাজ করা উচিত এবং যারা শুরু করে দিয়েছেন তারা মিলিয়ে নিন কোন জায়গাতে উন্নয়ন দরকার।

Add Comment

Skip to toolbar