কম্পিউটার
কম্পিউটার হলো মানবজাতির বুকে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন। এই প্রযুক্তির সাহায্যেই আমরা বিশাল পরিমাণ ডাটা প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করতে পারছি। প্রতিদিনের কাজ আরো দ্রুতবেগে সম্পন্ন করার জন্য এবং কাজগুলোর মাঝে স্পষ্টতা ও প্রাঞ্জলতা আনয়ন করার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য। প্রাচীনকালে কম্পিউটার একটি বড় ঘরের আকারের ছিল এবং যান্ত্রিক-কার্য সম্পাদন করতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ হতো। তারপর ক্রমাগতভাবে উন্নত প্রযুক্তি আবির্ভাবের ফলে কম্পিউটারগুলি একটি ছোট ঘড়ির আকারে সঙ্কুচিত হতে লাগলো।
কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ
কম্পিউটারের অপারেশনাল নীতির উপর ভিত্তি করে এনালগ, ডিজিটাল এবং হাইব্রিড আকারে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
এনালগ কম্পিউটারঃ এগুলো আজ প্রায় বিলুপ্ত। এগুলো ডিজিটাল কম্পিউটার থেকে আলাদা। কারণ একটি
এনালগ কম্পিউটার একসাথে বেশ কিছু গাণিতিক ক্রিয়া সম্পাদন করে থাকে। এটি
গাণিতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য ক্রমাগত ভেরিয়েবল ব্যবহার করে থাকে।
ডিজিটাল কম্পিউটার: এই কম্পিউটারগুলো ডিজিটাল সার্কিট ব্যবহার করে কাজ করে এবং দুটি স্টেটে কাজ করার জন্য সুসংবদ্ধভাবে ডিজাইন করা থাকে যা বিট ১ এবং বিট ০ নামে পরিচিত। এই দুটি স্টেট চালু এবং বন্ধ অবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ডিজিটাল কম্পিউটারগুলি দ্বারা মূলত জটিল গণনা করা হয়ে থাকে। এছাড়া এগুলোতে ডাটা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে উচ্চতর প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি রয়েছে। সাধারন বা বিশেষ উদ্দেশ্যের কার্যসম্পাদনকারী কম্পিউটারগুলো সচরাচর প্রোগ্রামেবল ডিজিটাল কম্পিউটারের হয়ে থাকে। সাধারণ
উদ্দেশ্যের কার্যসম্পাদনকারী কম্পিউটারগুলিকে সাধারণ অবস্থায় নির্দিষ্ট ধরণের ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
হাইব্রিড কম্পিউটার: এই কম্পিউটারগুলি ডিজিটাল এবং এনালগ উভয় কম্পিউটারের সংমিশ্রণ। এই ধরনের কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেগমেন্টগুলি এনালগ সংকেতকে ডিজিটালে রূপান্তর করে প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
কার্যপ্রণালীর উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের শ্রেণিবিন্যাস।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার:
বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশনের (যেমনঃ বাল্ক) জন্য মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। বেশিরভাগ মেইনফ্রেম কম্পিউটারের একাধিক অপারেটিং হোস্ট করার ক্ষমতা রয়েছে। মেইনফ্রেম কম্পিউটার বেশ কয়েকটি ছোট সার্ভারের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।
মাইক্রোকম্পিউটার: একটি মাইক্রোপ্রসেসর এবং এর কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট নিয়ে একটি মাইক্রোকম্পিউটার গঠিত।
মাইক্রোকম্পিউটার মেইনফ্রেমের মতো স্থান দখল করে না। মাইক্রোকম্পিউটারকে ব্যক্তিগত কম্পিউটার বলা যেতে পারে। একটি মাইক্রোকম্পিউটারে একটি মনিটর, একটি কীবোর্ড এবং অনুরূপ ইনপুট-আউটপুট ডিভাইস, RAM আকারে মেমরি এবং একটি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট থাকে। এই কম্পিউটারগুলো ডেস্ক বা টেবিলে রেখে কাজ করা যায়। তাই এই কম্পিউটারগুলো
একক-ব্যবহারকারী মানুষদের জন্য পছন্দের তালিকায় সবসময় শীর্ষে অবস্থান করে।