মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। ইলন মাস্ক টুইটার কেনার কথা তুলে সাইটটি নিয়ে আলোচনা আরও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত টুইটার হয়ত বিক্রি হবেনা। সে যাই হোক, চলুন এই পোস্টে টুইটার সম্পর্কে মজার কিছু বিষয় জেনে নিই।
প্রতি মিনিটে টুইটের সংখ্যা
টুইটারে প্রতি মিনিটে ৩৫০,০০০টি টুইট পোস্ট করা হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়নের অধিক টুইট পোস্ট করেন প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীগণ। এই সংখ্যা শুনে বড় মনে হলে চমকে যাবেন প্রতি মিনিটে ফেসবুক পোস্টের সংখ্যা শুনে। প্রতি মিনিটে প্রায় ৩ মিলিয়ন পোস্ট করা হয় ফেসবুকে।
টুইটার নামের উৎপত্তি
প্ল্যাটফর্মটির নাম করতে গিয়ে “Twitter” নির্বাচনের আগে “FriendStalker”, “Vibrate” ও “Twitch” এর মত অনেক নাম নিয়ে যাচাইবাচাই করা হয়। টুইটারে বন্ধু বা সেলিব্রিটিদের “স্টক” করা গেলেও ফ্রেন্ডস্টকার নামটি বর্তমানের টুইটারের বিচারে কোনোমতেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সহ-প্রতিষ্ঠাতা, নোয়াহ গ্লাস নামের খোঁজ করতে গিয়ে Twitter খুঁজে পান, যা দ্বারা কিছু নির্দিষ্ট পাখির দ্বারা তৈরী কিচিরমিচির আওয়াজকে বুঝানো হয়।
হ্যাশট্যাগ
ক্রিস মেসিনা নামের এক ভদ্রলোক এর জন্য আমরা হ্যাশট্যাগ ফিচারটি পেয়েছি। নির্দিষ্ট বিষয়ের মেসেজ এক স্থানে করতে হ্যাশট্যাগ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন উপলক্ষ্যে হ্যাশট্যাগ ফিচারটি বেশ কাজে আসে। বর্তমানে ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, এমনকি বিজ্ঞাপনেরব উপাদান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে হ্যাশট্যাগ।
ক্রিস মেসিনা চিন্তা করেছিলেন যে কোনো ওয়ার্ড না ফ্রেইজ এর আগে হ্যাশ (#) এর মতো যেকোনো সিম্বল যোগ করে একটি “ইন্সট্যান্ট চ্যানেল” তৈরী করা যেতে পারে। এই বিষয়ে তিনি টুইটার এর এক কো-ফাউন্ডার, নিজ স্টোনকে ২,০০০ শব্দের একটি প্রোপোজাল ও লিখেন। তবে এই আইডিয়াকে তিনি প্রত্যাখ্যান করে দেন। ২০০৭ সালে ডিয়েগো ওয়াইল্ডফায়ার এর সময় এই বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে ও পরে টুইটারে তা যোগ করা হয়।
সবচেয়ে বেশি ফলো করা ব্যাক্তি
বর্তমানে টুইটারে সবচেয়ে বেশি ফলো করা ব্যক্তি হলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বর্তমানে তাঁর টুইটার একাউন্টে প্রায় ১৩১মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। এরপরে অধিক ফলোয়ারের তালিকায় রয়েছে কানাডিয়ান গায়ক জাস্টন বিবার। সবচেয়ে বেশি ফলো করা ৫জন টুইটার ব্যাক্তিত্বরা হলেনঃ বারাক ওবামা, জাস্টিন বিবার, কেটি পেরি, রিহানা ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
সুইডেন ও টুইটার
সুইডেনের অফিসিয়াল টুইটার একাউন্ট যেকোনো একজন নাগরিককে একদিনের জন্য নিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতা প্রদান করতো সুইডেন। ২০১১ সালে শুরু হওয়া এই মজার বিষয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলে। দেশকে নাগরিকের চোখে দেখার প্রয়াস হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়, যা পরে অনলাইন হ্যারাসমেন্ট এর কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
টুইটার ওভারলোড হলে কি হয়?
২০০৭সালে টুইটারে প্রচুর গ্রোথ দেখা যায় ও বিভিন্ন উপলক্ষ্যে টুইটারে এসে ভীড় করতে থাকে সবাই। এসব কারণে টুইটারে নতুন ব্যবহারকারী ও ব্যবহারের সংখ্যা অত্যাধিক হারে বেড়ে যায়। টুইটার সার্ভার যখন ওভারলোড হয়ে যায়, তখন একটি ইলাস্ট্রেশন দেখা যায়। এই ইলাস্ট্রেশনে একটি হোয়েলকে দেখা যায় যাকে ৮টি টুইটার-বার্ড পানি থেকে তুলছে। এই পেজকে টুইটার ব্যবহারকারীগণ “Fail Whale” নামে ডাকেন।
Twttr নাকি Twitter?
টুইটার সম্পর্কে আরেকটি মজার তথ্য হলো এর নাম প্রথমে Twitter ছিলোনা। প্ল্যাটফর্মটির অফিসিয়াল নাম হিসেবে প্রথমে “Twttr” সিলেক্ট করা হয়। ঐ সময়ে ব্র্যান্ডের নাম থেকে Vowel বাদ দেওয়ার একটি ট্রেন্ড চলছিলো। সফটওয়্যার ডেভলপার, নোয়াহ গ্লাস twttr ও twitter নাম দুইটি খুঁজে বের করেছিলেন।
ক্যারেক্টার লিমিট
প্রথমদিকে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে টুইটার ব্যবহার করা যেতো ও টুইট করা যেতো। মেসেজের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৬০ ক্যারেক্টার ছিলো লিমিট, একই কারণে ১৪০ এর অধিক ক্যারেক্টার ব্যবহার করে টুইট করা সম্ভব ছিলোনা। অর্থাৎ এসএমএস এর ক্যারেক্টার লিমিটের কারণে টুইটারের এই নিয়ম ছিলো। পরে অবশ্য সর্বোচ্চ টুইট এর দৈর্ঘ্য ২৮০ ক্যারেক্টার করা হয়।
টুইটার ও এডিকশন
শিকাগো ইউনিভার্সিটির বুথ বিজনেস স্কুল এর তথ্যমতে এলকোহোল ও সিগারেট এর চেয়ে টুইটার অধিক এডিক্টিভ বা আসক্তিজনক।
প্রথম টুইট
প্রথম টুইটটি ছিলো টুইটার এর কো-ফাউন্ডার, জ্যাক ডর্সি এর। “Just setting up my twttr” লিখে ২০০৬সালের ২১মার্চ টুইটটি পোস্ট করেন জ্যাক। কিছুদিন আগে এই টুইট এনএফটি আকারে বিক্রি হয় ২.৯মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে।
টুইটারের পাখির নাম
আপনি কি জানেন টুইটারের লোগো তে ব্যবহার করা পাখির নাম কি? টুইটার এর এই নীল পাখির নাম হলো ল্যারি। ২০০৬সালে টুইটার প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১২সালে এসে “ল্যারি” এর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
টুইটার সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য জেনে নিন
বিশেষ বিশ্বাস
টুইটার সম্পর্কে মজার বিষয়ের এই তালিকায় সবচেয়ে স্পেশাল তথ্য জানতে প্রস্তুত হোন। ভ্যাটিকান ও ক্যাথলিক চার্চ অনুসারীগণ বিশ্বাস করেন শোধনাগারে মৃত্যুর পর তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা হবে। অন্যদের সাহায্য করা, গরিবদের দান করা ও নিয়মিত প্রার্থনা করার মাধ্যমে শোধনাগারে কাটানো সময় কমানো যায়। মজার ব্যাপার হলো ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ডে ২০১৩ এর সময় ভ্যাটিকান ঘোষণা করে টুইটারে যারা পোপ কে ফলো করবে তাদের শোধনাগারে কাটানো সময় কমে আসবে ও তারা খুব দ্রুত হেভেনে যেতে পারবে।
টুইটার ব্যান যেসব দেশে
অনেক দেশে অফিসিয়ালি টুইটার ব্যান করা হয়েছে। নাইজেরিয়া, চীন, ইরান, উত্তর কোরিয়া, তুর্কমেনিস্থান, ইত্যাদি দেশে অফিসিয়ালি টুইটার ব্যান করা হয়েছে। Source 1, Source 2, Source 3, Source 4