বাংলায় জাভা প্রোগ্রামিং শেখার কোর্স।

জাভা বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। এন্টারপ্রাইজ এপ্লিক্যাশান ডেভেলেপমেন্টে এখনো জাভার বিকল্প তৈরি হয়নি বলে ধরা হয়। জাভার জনপ্রিয়তার মুল কারণ এর portability, নিরাপত্তা, এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ও ওয়েব প্রোগ্রামিং এর পরিপূর্ণ সাপোর্ট। এই কোর্সে জাভার অ আ ক খ থেকে শুরু করে এর ব্যবহারিক প্রয়োগ এবং অন্যন্য বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

১৯৯৫ সালের ২৩ শে মে। ঝকঝকে ঝলমলে চমৎকার একটি দিন। জন গেইজ, ডিরেক্টর অব সান মাইক্রোসিস্টেম সাথে Marc Andreesen, কো ফাওন্ডার এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট অব নেটস্কেপ ঘোষণা দেন যে, জাভা টেকনোলজি মোটেই কোন উপকথা নয়, বরং এটিই বাস্তবতা এবং তারা এটি Netscape Navigator এর সাথে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।

সে সময় জাভাতে কাজ করে এমন লোকের সংখ্যা ত্রিশেরও কম। তারা কখনোই চিন্তা করে নি, তাদের এই টিম ভবিষ্যৎ পৃথিবীর প্রধানতম টেকনোলজি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারী Mars Exploration Rover মঙ্গল গ্রহের মাটিতে পা রাখে যার কন্ট্রোল সিস্টেম থেকে শুরু করে পৃথিবীর অধিকাংশ কনজুমার ইলেকট্রনিক্স – (ক্যাবল সেট-টব বক্স, ভিসিআর, টোস্টার, পিডিএ, স্মার্টফোন) ৯৭% এন্টারপ্রাইজ ডেস্কটপ ৮৯% ডেস্কটপ অব ইউএসএ, ৩ বিলিয়ন মোবাইল ফোন, ৫ বিলিয়ন জাভা কার্ড, ১২৫ মিলিয়ন টিভি ডিভাইস, ১০০% ব্লু-রে ডিস্ক প্লেয়ার … এই লিস্ট লম্বা হতেই থাকবে) জাভা রান করে। যে ভাবে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয় এবং ফেসবুক একাউন্ট পুনরুদ্ধার পদ্ধতিসহ বিস্তারিত।

নিচের ভিডিও টি চমৎকার। একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে।

চলুন একটু পেছনের ইতিহাস জেনে নেই।

তখন সি-প্লাস প্লাস এর একচ্ছত্রাধিপত্য।

সান মাইক্রাসিস্টেম- মূলত হার্ডওয়্যার কোম্পানী। ১৯৭২ থেকে ১৯৯১ সালে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের এক রেভ্যুলেশান হয়। দ্রুত এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন হার্ডওয়্যার অল্প দামে পাওয়া যাচ্ছে এবং সেই সাথে কমপ্লেক্স সফটওয়্যারের চাহিদা দ্রুতই বেড়ে যাচ্ছে। ১৯৭২ সালে Dennis Ritchie সি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ডেভেলপ করেন যা প্রোগ্রামারদের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয়। কিন্তু ততদিনে প্রোগ্রামারদের কাছে সি -এর স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং কিছুটা ক্লান্তিকর মনে হতে শুরু করেছে। এর ফলশ্রুতিতে Bjarne Stroustrup 1979 সালে ডেভেলপ করে সি প্লাস প্লাস যা কিনা সি এর এনহান্সমেন্ট । এটি সাথে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ধারণাকে পরিচিত করে তুলে। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং এর সুবিধে হচ্ছে প্রোগ্রামার পুনর্ব্যবহারযোগ্য(reusable) কোড লিখতে পারে যা কিনা পরে অন্য কাজে পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

১৯৯০ সাল। সান মাইক্রাসিস্টেম -এ সি প্লাস প্লাস এর আধিপত্যে সি-তে লেখা টুল এবং এপিআই গুলো প্রায় অবস্যুলেট হতে শুরু করেছে। Patrick Naughton, ইঞ্জিনিয়ার অব সান মাইক্রাসিস্টেম, মোটামুটি হতাশ এবং এক ধরণের অকওয়্যার্ড পরিস্থিতির স্বীকার। ততদিনে স্টিভ জব অ্যাপল কম্পিউটার থেকে বিতাড়িত হয়ে NeXT Computer, Inc প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন( যা কিনা সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এবং যার ফলশ্রুতিতে তৈরি হয়েছে আজকের ম্যাক-ওস) এবং NeXTSTEP নামে একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করেন। এতে কিছু অসাধারণ ব্যাপার ছিল যার মধ্যে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড এপ্লিক্যশান লেয়ার এর ধারণাটি ছিল অসাধারণ যাতে কিনা অবজেক্ট ধরে ধরে কাস্টমাইজড সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলা যায়। Patrick Naughton ইতিমধ্যে NeXT এর দিকে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেলেছেন কিন্তু তখন একবার তাকে শেষ সুযোগ হিসেবে একটি অতি গোপন প্রজেক্টের অনুমোদন দেওয়া হয় যার কথা কেউ জানতো না। কিছুদিন পরেই তার সাথে যুক্ত হয় James Gosling এবং Mike Sheridan । তখন এর নাম দেওয়া হয় গ্রিন প্রজেক্ট। সময়ের সাথে গ্রিন প্রজেক্ট এর দন্তোদ্গম হয় এবং তারা কম্পিউটার ছাড়াও বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে নার্চার করতে থাকে।

এর মধ্যে ১৩ জন স্টাফ এই গ্রিন টিম ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের সেন্ড হিল রোড এর একটি ছোট্ট অফিসে কাজ করতে থাকে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য সি প্লাস প্লাস এর একটি ভাল ভার্সন তৈরি করা যা কিনা হবে অনেক দ্রুতগামী এবং রেস্পন্সিভ। সেই সময়ে কম্পিউটার ছাড়াও কনজুমার ইলেকট্রনিক্স যেমন -পিডিএ, Cable-Set Top Box ইত্যাদির চাহিদা বেড়ে গেছে। একদল ইঞ্জিনিয়ার এক সাথে থাকলে যা হয়, তারা নানারকম জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে থাকে, নানা রকম আইডিয়া তৈরি হয়, তা থেকে প্রোটোটাইপ তৈরি করতে থাকে। এর মধ্যে জেমস গসলিং তার সি প্লাস প্লাস এনহান্সমেন্ট চালিয়ে যেতে থাকেন। তিনি এর নাম দেন সি প্লাস প্লাস প্লাস প্লাস মাইনাস মাইনাস (C++ ++ – -) । এখানে বাড়তি ++ মানে হচ্ছে নতুন জিনিস যোগ করা এবং – – মানে হচ্ছে কিছু জিনিস ফেলে দেওয়া। জেমস গসলিং এর জানালা দিয়ে একটি ওক গাছ দেখা যায়। একদিন তিনি অফিস থেকে বের হয়ে ঐ গাছটির নিচে দাড়ান এবং সাথে সাথে C++ ++ – – নাম পরিবর্তন করার সিন্ধান্ত নেন এবং নতুন নাম দেন ওক। বিটকয়েন কি ? বিটকয়েনের ইতিহাস এবং কেন এটি এত জনপ্রিয় হচ্ছে।

এর মধ্যে ইঞ্জিয়াররা মিলে এম্বেডেড সিস্টেম নিয়ে নার্চার করতে থাকা অবস্থায় নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হন। এম্বেডেড সিস্টেম এ মেমরি কম থাকে, প্রসেসিং পাওয়ারও কম থাকে। এই সিস্টেমে সি++ (যা কিনা কম্পিউটার এর মতো বড় ফ্রুটিপ্রিন্টের হার্ডওয়্যারের জন্যে ডিজাইন করা) চালাতে গিয়ে তারা অদ্ভুত অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকে। এইসব সমস্যার সমাধান করার জন্যে গ্রিন টিম নানা রকম চিন্তা ভাবনা করতে থাকে। এই সময়ে মানুষ পিডিএ, Cable-Set Top Box গুলোর মরণদশা দেখতে শুরু করে। কারণ, যদিও ওক নিয়ে যথেষ্ট এগিয়েছে কিন্তু এটি কোনভাবেই এদেরকে সাহায্য করতে পারছিল না। একমাত্র একটি অলৌকিক ঘটনায় পারে এই প্রজেক্ট সফল করতে। ঠিক তখনি সেই প্রতীক্ষিত প্রত্যাশা আলোর মুখ দেখে। জেমস গসলিং আউট অব দ্যা বক্স একটা যুগান্তকারী ধারণা নিয়ে আসে। সেটি হলো ভার্চুয়াল মেশিন। অর্থাৎ আমরা একটাি কাল্পনিক মেশিনের জন্যে কোড লিখবো যা কিনা কম্পাইল হয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কোড তৈরি করবে। এবং জাভা ভার্চুয়াল মেশিন সেই অন্তর্বর্তীকালীন কোডকে রান টাইমে রিয়েল ডিভাইসের জন্যে প্রয়োজন অনুযায়ী মেশিন কোড তৈরি করবে।

ঠিক সেই সময়েই National Center for Supercomputing Applications (NCSA) একটি কমার্শিয়াল ওয়েব ব্রাউজার বের করে এবং তাদের টিম ইন্টারনেট এর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করে। তারা একটি নতুন ধারণা নিয়ে আসে সেটি হলো, একধরণের ছোট্ট প্রোগ্রাম যা কিনা ব্রাউজার এর মধ্যে চলবে – এর নাম দেয় অ্যাপলেট। অ্যাপলেট ধারণা থেকে তারা ঠিক করে অ্যাপলেট এর জন্যে কিছু স্ট্যাডার্ড – এটি হতে হবে ছোট্ট, খুব সিম্পল, এর স্ট্যাডার্ড এপিআই থাকতে হবে, এটি হবে প্লাটফর্ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট, এবং আউট-অব-দ্যা বক্স নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামিং করা যাবে। তারা তখনকার সময়ের ইন্টারনেট বুমকে উদ্দ্যেশ্য করে নেক্সট জেনারেশান প্রোডাক্ট ডেভেলপ করতে চেয়েছিল। এই প্রজেক্ট এর কার্টুন নাম ছিল Duke ( যা কিনা এখন জাভা-এর মাস্কট হিসেবে চিনি)। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এর কোনটিই ঠিক মতো সি++ দিয়ে করা যাচ্ছিল না। সুতরাং পরবর্তীতে তারা সিন্ধান্ত নেয় যে এমবেডেড সিস্টেমের সমস্যার সমাধানটি তারা ওয়েব ব্রাউজার এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করবে । সেই সময়ে মানুষ ওয়েব ব্রাউজার এর শুধুমাত্র স্ট্যাটিক পেইজ এ টেক্সট আর ইমেজ ছাড়া কিছু দেখতে পেত না। এই টেকনোলজি ব্যবহার করায় ব্রাউজার এনিমেশান থেকে শুরু করে ইন্টারেকটিভ অ্যাপলেট সকলের নজর কাড়ে যা কিনা জাভা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর সফলতার মূল কারণ।

জেমস গসলিং এর এই ভার্চুয়াল মেশিন-এর সল্যুশান ছিল সত্যিকার অর্থেই যুগান্তকারী এবং গ্রিন টিম এর রিলিজ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু তখন-ই নতুন ঝামেলার সূচনা হয়, lawyers এসে তাদের জানায় এর নাম Oak দেওয়া যাবে না, কারণ এটি ইতিমধ্যেই Oak Technologies এর ট্রেড মার্ক। সুতরাং নাম পরিবর্তন করতে হবে। শুরু হয় ব্রেইনস্টর্মিং । কিন্তু কোন ভাবেই একটি ভাল নাম নির্বাচন করা যাচ্ছিল না। অনেকেই অনেক ধরণের নাম উপস্থাপন করে, যেমন – DNA, Silk , Ruby, yuck, Silk, Lyric, Pepper, NetProse, Neon, Java ইত্যাদি ইত্যাদি। এর সব গুলো লিগাল ডিপার্টমেন্ট এ সাবমিট করার পর মাত্র Java, DNA, and Silk এই তিনটি নাম ফিরে আসে যা কিনা ক্লিন। নাম নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টার মিটিং চলতে থাকে। এর মধ্যে Chris Warth প্রপোজ করে Java, কারণ তখন তার হাতে ছিল এক কাপ গরম Peet’s Java (কফি)। শেষ পর্যন্ত নাম ঠিক করা হয় Java কারণ একমাত্র এই নামেই সব থেকে পজিটিভ রিএকশান পাওয়া যাচ্ছিল।

‌১৯৯৫ সালের মে মাসে জাভা এর প্রথম পাবলিক ভার্সন রিলিজ হয়। এবার নিজেই তৈরি করুন আপনার নিজেস্ব VPN!

এর পরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। জাভা হচ্ছে এই গ্রহের সবচেয়ে সফল প্রোগ্রামিং ভাষা।

বাংলায় জাভা প্রোগ্রামিং শেখার কোর্স

Java Video Tutorial for Beginners

Add Comment