লেখাপড়া শেষ করার পরে আমরা সবাই জীবিকা নির্বাহের জন্য কোন একটি পেষা বেছে নিই। কেউ চাকরি করে আবার কেউ ব্যবসায় করে। কিন্তু আবার অনেকে বুঝে উঠতে পারে না যে সে কি করবে।
কোনটা করা তার জন্য উচিত হবে। আপনি যদি নিজের দিক থেকে চিন্তা করেন তাহলে আপনার ও হয়তো একই মনে হবে। আসলে আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারন একটি ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের ভবিষ্যতকে অন্ধকার করে দিতে পারে।
আবার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত আমাদের ভবিষ্যতকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে। তাই জীবনের পেষা বেছে নেওয়ার জন্য একটি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কোন বিকল্প নেই। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো আপনি কোনটা বেছে নিবেন। এর সঠিক উত্তর টা খুঁজে বের করে আমি আপনাদের সাথে তুলে ধরবো।
চাকরি কী?
চাকরি হলো অন্যের অধীনে থেকে কাজ করে মাস শেষে একটা নির্দিষ্ট বেতন পাওয়া। এটা আপনার জন্য চাকরি হতে পারে, কিন্তু অন্য কারো জন্য ব্যবসা। অর্থাৎ আপনি অন্য কোন ব্যক্তির ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যেই অর্থ পান সেটাই আপনার জন্য চাকরি। আপনি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করে মাস শেষে বেতন পাবেন।
কোম্পানির লস হোক বা লাভ, আপনার উপর কোন দায় থাকবে না বা আপনি কিছু বহনও করবেন না। সবকিছু মালিক বহন করবে। আপনি কেবল আপনার প্রতিদিনের নির্দিষ্ট কাজ করে বেতন পাবেন।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক থেকে টাকা আয়ের নতুন উপায় ফেসবুকেও শর্ট ভিডিও
ব্যবসা কী?
ব্যবসায় হলো নিজে পরিচালনা করে কোন কাজ করা এবং অন্যদের নিজের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান সব একাই বহন করা। নিজেই সব কিছুর সিদ্ধান্ত নেওয়া। এতে কারো কাছে জবাবদিহি করার সু্যোগ নেই। আমি নিজেই সব কিছুর মালিক। ব্যবসায়ে নির্দিষ্ট কোন বেতন নেই। ব্যবসায় করার মাধ্যমে আরো অনেক মানুষের কাজের সু্যোগ সৃষ্টি করা যায়।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক প্রোফাইল থেকে টাকা আয়ের উপায়
আপনি কোনটা করবেন? চলুন নিরপেক্ষ ভাবে চাকরি ও ব্যবসায়ের তুলনা করা যাক।
১.ঝুঁকি
ঝুকির দিক থেকে চাকরি ও ব্যবসায়ের মধ্যে সবথেকে বেশি পার্থক্য। কারন ব্যাবসায়ে আছে অনেক বেশি ঝুঁকি। আর চাকরি তে ঝুঁকি নেই বললেই চলে। কারন চাকরি অন্য মালিকের অধীনে থেকে করতে হয়। তাই ঝুঁকিও সবকিছু মালিক বহন করে থাকে। আমরা শুধুমাত্র আমাদের নির্দিষ্ট কাজটুকু করে বেতন পেয়ে থাকি। প্রতিষ্ঠানের কোন দায় আমাদের উপর পরে না।
লাভ হলেও মালিক তা একা ভোগ করে আবার লস হলেও মালিক তা একা বহন করে থাকে। অপরদিকে ব্যবসায় সবকিছু নিজে বহন করতে হয়। লস হলেও নিজে বহন করতে হয় আবার লাভ হলেও নিজেই ভোগ করে থাকি। ব্যবসায় মানেই ঝুঁকি। আজ লাভ হচ্ছে তো কাল লস হতে পারে। এর কোন নিশ্চয়তা নেই।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করার উপায়
২.অর্থ
আপনি কাজে যতই পারদর্শী থাকেন, মাস শেষে আপনি একটি নির্দিষ্ট বেতনই পেয়ে থাকবেন। আর প্রোমোশন পেতে হলেও আপনাকে নির্দিষ্ট বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর ব্যবসায়ে আপনার অর্থ উপার্জনের কোন শেষ থাকবে না। অনেক অল্প সময়ে আপনি অনেক টাকা আায় করে ফেলবেন যা আপনি বুঝতেও পারবেন না। ব্যবসায়ে কোন নির্দিষ্ট বেতন নেই। এখানে অর্থ উপার্জনের কোন সীমা থাকবে না।
আরো পড়ুনঃ ছাত্রজীবনে আয় করার সেরা কিছু উপায়
৩.পরিশ্রম
চাকরি করার ক্ষেত্রে আপনি একটি সীমিত সময় ধরে সীমিত পরিশ্রমে কাজ করে যাবেন। এবং আপনার দৈনিক কাজ ও মাসিক ছুটি নির্ধারণ করা থাকবে। কিন্তু একটি ব্যবসায় সফল ভাবে দাঁড় করাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এখানে কাজের কোন সীমা নেই বা ছুটির ও কোন সীমা নেই। এমনও হতে পারে আপনাকে প্রতিদিনই কাজ করে যেতে হবে।
৪.স্বাধীনতা
ব্যবসায়ে আছে নিজের ইচ্ছেমতো স্বাধীনতা। নিজের ইচ্ছেই সবকিছু করা যেতে পারে। যখন ইচ্ছে তখনই ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারে আবার স্বাধীনভাবেই সব সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। কিন্তু একজন সফল ব্যবসায়ী তা কোনভাবেই করবে না। কারন একদিনের ছুটি মানে তার ব্যবসায়ের অনেক বড় ক্ষতি। অন্যদিকে একজন চাকরিজীবি স্বাধীন ভাবে কোন কিছু করতে পারে না। মালিকের সিদ্ধান্তকেই তার মেনে নিতে হয়। তার ইচ্ছেমতো সে কোন কিছু করতে পারে না।
আরো পড়ুনঃ স্ন্যাপচ্যাটের স্টোরিজ থেকেও মিলবে অর্থ
৫.দায়িত্ব
একজন ব্যবসায়ীর উপর অনেক দায়িত্ব থাকে। কিভাবে ব্যবসায়কে ভালো একটা অবস্থানে নেওয়া যায় এবং ব্যবসায় সফলতা অর্জন করা যায় এসব দিক দিয়ে অনেক ভাবতে হয়। আর যেহেতু সে নিজেই মালিক তাই প্রতিষ্ঠানের সকল দায়িত্ব ও তার উপরই থাকে।
শেষ কিছু কথা, যদি আপনি আপনার জীবনের কিছু চাহিদা পূরন করতে চান তাহলে ব্যবসায় করুন। আর যদি আপনি আপনার স্বপ্ন পূরন করতে চান তাহলে ব্যবসায় করুন। আপনি যদি স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে চান তাহলে ব্যবসায় আপনার জন্য। আর যদি অন্যের অধীনে থেকে কাজ করতে চান তাহলে চাকরি করুন।
ব্যবসায়ে যেমন ঝুঁকি বেশি, শ্রম বেশি, দায়িত্ব বেশি, ঠিক তেমনি টাকাও বেশি। আর চাকরি তে সকল কিছুই সীমিত। আশাকরি আপনি বুঝতে পেরেছেন আপনার জন্য কোনটা করা উচিত হবে।
ধন্যবাদ।
আরো পড়ুনঃ ইউটিউবে আয় করার নতুন ফিচারগুলো জেনে নিন