সোশ্যাল মিডিয়া কমবেশি সবাই ব্যবহার করে থাকেন। অসংখ্য ব্যবহারকারী থাকায় ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে আয়ের উপায় রয়েছে। সাধারণ অভিজ্ঞতা নিয়ে যে কেউ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয় করতে পারবেন। এই পোস্টে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয় এর সেরা উপায় হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট অনুসারী থাকলে সেক্ষেত্রে পছন্দের ব্র্যান্ডকে প্রোমোট করে আয় করা সম্ভব। খুব সহজে অ্যাফিলিয়েটযোগ্য কোনো প্রোডাক্ট নির্বাচন করে তা বিক্রি থেকে আয় করা যাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যেম। অ্যাফিলিয়েট মার্কেট সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা না থাকলে বাংলাটেক এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ের পোস্টটি ঘুরে আসুন। 👉 অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় সম্পর্কে জানুন।
পেইড মেম্বারশিপ
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে আয়ের অন্যতম পথ হলো ফলোয়ারদের জন্য পেইড এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট তৈরী করা। মাসিক মেম্বারশিপ এর মাধ্যমে যেকোনো এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট ফলোয়ারদের সাথে শেয়ার করে আয় করা যায়। প্যাট্রিওন এর মতো মেম্বারশিপ-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম বিগত বছরগুলোতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এটিই প্রমাণ করে যে বিশ্বব্যাপী সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক মেম্বারশিপ ব্যবস্থাকে ইতিমধ্যে পছন্দ করছেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীগণ। ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইচ এর মতো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মসমূহে নিজেদের নিজস্ব ফিচার রয়েছে যার মাধ্যমে এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট ফলোয়ারদের কাছে সেল করা যায় মেম্বারশিপের মাধ্যমে। এমনকি টুইটার পর্যন্ত “সুপার ফলো” নামের সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক একটি সেবা টেস্ট করছে। 👉 ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়া সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের একটি উপায় হতে পারে। এসব মনিটাইজেশন প্ল্যাটফর্ম বা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম মূলত ব্র্যান্ড ও ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
[★★] মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন
অধিকাংশ ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে এপ্রুভাল পেতে হলে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার থাকা জরুরি। এপ্রুভ হওয়ায় পর একজন ইনফ্লুয়েন্সার পছন্দমত প্রোডাক্টসমূহ প্রোডাক্টসমূহ প্রোমোট করার সুযোগ পাবেন।
ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের বহুল প্রচলিত উপায় হচ্ছে ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ। ব্র্যান্ডসমূহ নতুন ইনফ্লুয়েন্সারদের কাছে যেতে চায়না, তাই শুরুতে পরিচিতি অর্জন করতে একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে নিজ থেকেই ব্র্যান্ডের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের পোস্টে পার্টনারশিপ ডিল থাকা ব্র্যান্ডের পণ্যের প্রমোশন চালাতে হয়। এছাড়া ব্র্যান্ডর সাথে আলাপ আলোচনা করে গিভএওয়ে এর আয়োজন করতে পারবেন।
স্পন্সরড ভিডিও সিরিজ
কোনো ব্র্যান্ডের সাথে পোস্টভিত্তিক স্পন্সরড পোস্টের ডিল এর বদলে ব্রান্ড এর সাথে সরাসরি ভিডিও সিরিজ স্পন্সর করার বিষয়ে কথা বলে দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে অর্জিত অর্থ নির্ভর করে ভিডিওতে ভিউস এর উপর। স্পন্সরড ভিডিও সিরিজ এর মাধ্যমে আয়ের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের সাথে সুসম্পর্ক রাখা জরুরি।
নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি
বিভিন ধরনের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস তৈরী করে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিক্রি করা যাবে। কোর্স, ই-বুক বা মেন্টরিং এর মত প্রোডাক্ট বা সার্ভিসসমূহ সোশ্যাল মিডিয়াতে সেল করে আয় করা যায়।
ধরুন একজন গিটারিস্ট বিনামূল্যে ইউটিউবে গিটার বাজানো শেখান। ইউটিউব থেকে আয়ের পরিমাণ বাড়াতে নিজস্ব প্রাইভেট লেসন তৈরী করতে পারেন উক্ত ব্যাক্তি। আবার একজন ইনফ্লুয়েন্সার চাইলে তার অবস্থানে যাত্রার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে কোর্স তৈরী করতে পারেন যা অন্যদের একই লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
মার্চেন্ডাইজ বিক্রি
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের সবচেয়ে সাধারণ মাধ্যম হলো মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করা। যেকোনো অনলাইন শপিং টুল বা সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে থাকা অনলাইন শপ ফিচার ব্যবহার করে বেশ সহজে জিনিসপত্র বিক্রি করা যায়।
প্রোডাক্ট প্রদর্শন করার জন্য প্রথমে যেকোনো একটি প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করতে হবে। এরপর আপনার ব্র্যান্ড আইডেন্টিটির সাথে মিল রেখে মার্চেন্ডাইজ তৈরি করে তা অনলাইন শপে যোগ করতে হবে।
ফেসবুক গ্রুপ
ফেসবুক গ্রুপ বিভিন্নভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। নিজের প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন দেখানো বা গ্রুপে অন্যদের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দেখানোর সুযোগ প্রদান করে ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করা সম্ভব।
এছাড়াও নিজের অডিয়েন্স এর সাথে সম্পর্ক ও যোগাযোগ গড়ে তুলতে ফেসবুক গ্রুপের জুড়ি নেই। প্রোডাক্ট মার্কেটিং বা নতুন কাস্টমারদের আকর্ষণ করতে ফেসবুক গ্রুপ বেশ কাজে আসতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টাকা আয়ের উপায়
ব্যবসা পরিচালনা করা হোক কিংবা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে সার্ভিস বিক্রি, যেকোনো ক্ষেত্রেই সেরা কাস্টমার সার্ভিস প্রদান করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। সোশ্যাল মিডিয়া নিজের অডিয়েন্সের সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্ল্যাটফর্ম। অন্যদের ভ্যালু ও গুরুত্ব প্রদান করে সোশ্যাল মিডিয়ার যোগ্য ব্যবহার সম্ভব।
কেউ যখনই আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে কোনো কমেন্ট করে বা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, উক্ত প্রশ্নের যথাযথ উত্তর সুন্দরভাবে প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ট্রিটমেন্ট এর জন্য পোটেনশিয়াল অডিয়েন্স আপনার ব্র্যান্ডের উপর আকৃষ্ট হবে ও আপনার পেজ থেকে কেনাকাটার চিন্তা করবে।
রোবট এর মত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা নিজের প্রোডাক্টের প্রোমোশন না চালিয়ে বরং একজন মানুষ হিসেবে চিন্তা করুন আপনি অডিয়েন্স হলে কোনো পোস্ট আপনার কতটুকু ভ্যালু প্রদান করতো। অডিয়েন্সের সাথে ভালো ব্যবহার হতে পারে ব্যবসার উন্নতির অন্যতম উপায়।
একজন কাস্টমারের আপনাকে দরকার নেই, কেননা তিনি একই প্রোডাক্ট অন্যজনের কাছ থেকে কিনতে পারছেন। কিন্তু একজন ব্যবসা পরিচালক হিসেবে অডিয়েন্স তৈরী করতে হবে যারা আপনার প্রোডাক্টসমূহ কিনবে। আর এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত ও সহজ করতে কাস্টমারদের গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বটে।
তাই চলমান ইস্যু নিয়ে আপডেট পোস্ট করতে থাকুন। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচিত টপিকসমূহ ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরীও একটি ভালো বুদ্ধি হতে পারে।
No Responses