মোবাইল ফাস্ট।
নতুন মোবাইল ফোন কেনার পর, কিছুদিন আরামে ব্যবহার করেন কিন্তু কিছু দিন যাওয়া পর আপনার ঐ মোবাইলে আর ঐ রকম স্পিড পান না, স্লো হয়ে যায়, মাঝে মাঝে হ্যাং করে, আপনার যে বাজেটেরই ফোন হোক না কেন। তবে কম বাজেটের মোবাইল একটু বেশি স্লো হয়। আপনি কি জানেন, আপনার মোবাইলে কিছু ট্রিক এবং কিছু ফাংশন পরিবর্তন করে আপনার মোবাইল নতুন এর মত ফাস্ট করা সম্ভব। যদি আপনার মোবাইল নতুন এর মত ফাস্ট করতে চান এবং এই বিষয়ে আপনারা নতুন হয়ে থাকেন তাহলে এই পোষ্ট কাজে দিবে। আজ মোবাইলের স্লো হওয়ার কারণ সমূহের নারীভূরি বের করে ছাড়বো।
আপনার মোবাইলে ৫০ শতাংশ স্লো বা হ্যাংক হওয়া জন্য দায়ি আপনার মোবালের ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা। ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা অন থাকলে যখন ই আপনার মোবাইলে ডাটা অন করবেন তখন আপনার মোবাইলে কোন প্রকার ইন্টানেট ব্যবহার না করলেও আপনার মোবাইলে অটোমেটিক ডেইটা খরচ হবে। এ সময় দেখবেন ২ থেকে ৩ মিনিট আর আপনার মোবাইল কাজই করছে না। নোটিফিকেশন আসতেই থাকে আসতেই থাকে হ্যাং এর মত মনে হ”্ছ।ে কারণ এগুলো অটোমেটিক ভাবে ডেটা ট্রান্সফার করে। সাধারণত দীর্ঘ সময় পর অন করলে এমনটি বেশি হয়। আপনি যদি ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা অফ কোরে দেন তাহলে এমনটি হবে না। অফ করার জন্য আপনার মোবাইলে সেটিংস এ যেতে হবে, সেটিংস এ গিয়ে অ্যাকাউন্ট অপশনে যাবেন, গিয়ে অটো সাইন ইন ডেটা অফ করে দিন ।
আপনার মোবাইলে আর একটি গুরুত্বপূর্ন অপশন এর কথা বলি। প্রায় প্রত্যেক মোবাইলে যে ডেভেলপার অপশন আছে আপনাকে সেখানে যেতে হবে, আর যদি না খুজে পান তাহলে আপানার ফোনের অ্যাবাউটে গিয়ে বিল্ড নাম্বার দেখতে পাবেন। বিল্ড নাম্বারে গিয়ে ৪-৫ বার না থেমে একধারে চাপ দিবেন। ডেভেলপার অপশন ওপেন হবে। এইবাই ডেভেলপার অপশনে গেলে আপনি অনেক কিছু দেখতে পাবেন যা খুবি কম ইউজারই দেখেছেন।
তার মধ্যে
Windows Animation Scale,
Transition animation scale,
Animator Duration Scale
এখনে এই তিনটি অপশনের সবগুলো অফ করে দিবেন , না হলে ০.৫ সিলেক্ট করে দিবেন। সেটা আপনার সুবিধা অনুযায়ি। তবে সিলেক্ট করার আগে দেখে নিবেন কোনটা আপনার কমফর্টেবল ফিল হয়। আমি ০.৫ কে পারফেক্ট মনে করি।
ডেভেলপার এর অন্য একটি অপশন Background Process Limit .
আপনি এক সাথে কতগুলো অ্যাপ ব্যাবহার করতে পারবেন। বেশি ব্যবহার করলে আপনার স¦াভাবিক ভাবে আপনার মোবাইলের র্যামের উপর বেশি চাপ পড়বে যার কারণে কাজ করতে পারবে না এবং অনেক বেশি রিসোর্স নষ্ট হবে। এবং আপনার ফোন স্লো হয়ে যাবে। তাই আমি মনে করি ডেভেলপার অপশনের Background Process Limit 4 করে দেওয়া উচিত। আপনার মোবাইলের ধরন অনুযায়ি কম বেশি করে দিতে পারেন। আবার যদি ভাবেন ডেভেলপার অপশন ওপেন করে ফেল্লাম তো কি যানি ক্ষতি হয়ে গেল। চিন্তার কোন কারণ নেই। আমি যেভাবে দেখাচ্ছি সেভাবে বন্ধ করে দিন।
অটো আপডেট চালু করা থাকলে তা বন্ধ করে দিন। যখনই আপনি মোবাইলে ডেটা চালু করে দিবেন তখনই এরা অটো মেটিক অপডেট নিতে থাকে, আপডেট করার সময় স্টপ করা কিংবা অন্য অ্যাপ ব্যবহার করা ভিশন কষ্টের কাজ, হ্যাং কাকে বলে এই সময় বোঝা যায়। আর আপনি যদি মোবাইল ডেটা ব্যবহার করেন তাহলে নিমিষেই শেষ। আমার আগে থেকেই বন্ধ করা আছে তাই চালু করে দিলাম। দেখুন কিভাবে সবাই আপডেট হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। বন্ধ করার জন্য প্লে-স্টোর এ গিয়ে সেটিংস এ যাবেন এবং সেখানে গিয়ে অটো আপডেট অফ করে দিবেন। ওয়াইফাই তে অন রাখতে পারেন তবে একেবারে বন্ধ করে দেওয়াই ভাল।
বিভিন্ন অ্যাপস আছে যেগুলোতে অটো ছবি, ভিডিও, অ্যাপস ডাউনলোড হয়ে যায়। সেগুলো অটো পারমিশন বন্ধ করে দিন। কিছু কিছু অ্যাপে এমনিতেই অফ থাকে আর কিছুতে থাকে না। যেমন হটসঅ্যাপ, ইমো, মেসেঞ্জার। এগুলো বন্ধ করবেন যেভাবে। প্রথমে আপনার মোবাইলো হোয়াটস্ অ্যাপ অপশনে গিয়ে সেটিংস এ যাবেন এবং এখানে দেখতে পাবেন Data and Storage Usage. ওপেন করলে When Usages Mobile Data এবং When Connected on Wifi দেখতে পাবেন। When Usages Mobile Data এবং When Connected on Wifi তে গিয়ে Photos, Audio, Videos, Documents এ যে টিক চিহ্ন দেওয়া আছে ওখানে সবগুলো টিক চিহ্ন তুলে দিন এবং ওকেতে চাপ দিন। এভাবে মেসেঞ্জারের, এবং ইমোতেও মোবাইর এর ধরন অনুযায়ি কাজ করুন।
আপনার মোবাইলে সেটিংস এ গিয়ে ব্যাটারি অপটিমাইজিশন এ গিয়ে দেখবেন আপনার মোবইলে কোন এ্যাপস কি পরিমান ব্যাটারি কষ্ট করেছে।
আমি ইউটিউবটি Facebook এর চাইতে বেশি ব্যবহার করেছি কিন্তু ফেসবুকে বেশি চার্জ খেয়েছে। যা আপনি লক্ষ করলেও দেখতে পারবেন। এখানে দেখতে পারবেন কত ব্যাটারি বেশি নষ্ট হয়েছে । তাই আপনার দেখতে হবে ব্যকগ্রাউন্ড ডাটা অন আছে কিনা। থাকলে এখান থেকে বšধ কনে দিন সঙ্গে এ্যালো অটো স্টার্ট আপ বন্ধ করে দিন। এতে আপনা মোবাইলে অতিরক্তি ডেটা, ব্যাটারি এবং রিসোর্স কস্ট কম হবে এবং আপনার মোবাইল ফাস্ট হয়ে যাবে।
এবার আসি আপনার মোবাইলের Sim card & Mobile Data তে। আপনি আপনার মোবাইলে সেটিংস এ গিয়ে Sim card & Mobile Data বের করুন এবং Data Usage এ গিয়ে Data Saving এ চাপুন, এখানে এসে আপনি অনেক তথ্য দেওয়া আছে এটা ভালভাবে পড়–ন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কি হবে আর কি হবে না । এটা অন করে দিন।
ফোন স্লো হওয়ার কারন ৪০% সম্ভাবনা থাকে আপনার ফোন মেমোরি বা রোম বুক হওয়ার কারণে। যেগুলো ১২ জিবি, ৩২ জিবি থাকে তা যদি বুক হয়, তাহলে আপনার ফোন স্লো হয়ে যায়। যেগুলেতে ফোন স্টোরেজ কম আছে সে মোবাইলগুলোতে এই সমস্যা বেশি হয়। কিছুদিন পরই দেখা যায় Storage Running Out/ Space Running Out তো আপনার মোবাইলের ইন্টারনাল মেমোরি ফ্রি করুন তো আপনার মোবাইল ফাস্ট হয়ে যাবে। মোবাইল এর ইন্টারনাল মেমোরি ফাকা রাখাই ভাল। পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন। আপনি আপনার মোবাইলের ফোন মেমোরি কি ভাবে ফ্রি করবেন তা ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরছি।
অনেক গুলো এ্যাপস আছে যেগুলো ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে একবারও ব্যবহার করেননি। সে সমস্ত এ্যাপস রাখান দরকার নেই আনইনিস্টল করে দিন। আনইনিস্টল না করতে পারলে ডিজেবল করে দিন।
আপনার মোবইলে কিছু অ্যাপছ আছে যে গুলো হল ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ। এগুলো থেকে অটোমেটিক ভাবে আপনার মোবাইলে ফটো সেভ হয়ে যায় যা আপনার মোবাইলে বাড়তি যায়গা দখল করে। ঐ সমস্ত ফাইল আপনার দরকার না থাকলে ডিলিট করে দিন আর যদি দরকার থাকে তা হলে অনলাইন স্টেরেজে রেখে দিন। আর যেগুলো আপনার কিছুদিন পর পর কাজে লাগে সেগুলো ছাড়া সব সড়িয়ে ফেলুন। আর অটো সেভ মুড অফ করে দিন। অনলাইন স্টোরেজ গুলো যেমন গুগোল ড্রাইভ, ড্রপবক্স, গুগোল ফটো ইত্যাদি। এখানে ফাইলগুলো রেখে দিন । এখান খেকে আপানার মোবাইল ফোন হরিয়ে গেলেও আপনার ফাইল হারাবে না।
আপনার মোবাইলে যে এক্সটারনাল মেমোরি বা মাইক্রো এসডি কার্ড অবশ্যই ভাল মানের ব্যবহার করবেন। বাজারে অনেক মেমোরি আছে যেগুলোর ডেটা ট্যান্সফার ক্ষমতা কম সেগুলো ব্যবহার করবেন না। ওটা অবশ্যই ভাল মানের কিনবেন। স্লো মেমোরি আপনার মোবাইল সেøা করার জন্য যথেস্ট।
মোবাইলের ওয়ালপেপারে এনিমেশন রাখলে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে কিন্তু হালকা একটি সুন্দর দেখা গেলেও এটার কিন্তু কোন দরকার নেই। আপনার মোবাইলে কোন অ্যানিমেশন থাকলে তা অফ করে দিন। আর স্বাভাবিক সুন্দর একটি ওয়ালপেপার সেট করে দিন। আপনার ওয়ালপেপার হতে আইকন গুলো রিমুভ করে পরিস্কার রাখুন।
আপনার ফোনের সাথে যে ডিফল্ট ক্লিনার থাকে সেটা দিয়ে নিয়োমিত পরিস্কার করুন। এক এক কোম্পানির মোবাইলে এক রকম, তবে কাজ একই রকম। নিয়মিত এটা দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। হা এক সতর্কবার্তা আপনারদের জন্য, আপনাদের মোবাইলের জন্য অনলাইনে ফ্রিতে যে ক্লিনার অ্যাপস পাওয়া যায়। সেটা ব্যবহার করার কথা চিন্তাও করবেন না। কারণ আপনার মোবাইলে এই বেচারা এ্যাডের ভান্ডার ডুকিয়ে দেবে। ডিফল্ট ক্লিনার না থাকলে আপনার মোবাইলে অ্যান্ডয়েড ফোল্ডার আছে সেখানে Cached Data নামে ফোল্ডার আছে । Cached Data কোন কাজের নয়। এই Cached Data আপনি কোন সাইটে ভিজিট করলে বা কোন অ্যাপ ব্যবহার করলে Cached Data আপনার মোবাইলে আসে এবং পরবর্তীত ঐ সাইটে দ্রুত ভিজিট করার জন্য সুবিধা প্রদান করে। কিন্তু এটা আপনার মোবাইলে অতিরিক্ত মেমোরি খরচ করে এবং মোবাইলের উপর চাপ প্রয়োগ করে। তাই এগুলো ডিলিট করে দিন। এবং আপনার মোবাইলের ফাকা ফোল্ডার ডিলিট করে দিন। এতে আপনার মোবাইল ফাস্ট হয়ে যাবে।
আপনি আপনার মোবাইলে জন্য যে সমস্ত লাইট এ্যাপস আছে সেগুলো ব্যবহার করুন। যেমন ফেসবুক লাইট, টুইটার লাইট, টিকটক লাইট, ইউটিউব গো । এর জন্য রিসোর্স কম লাগবে যা আপনার ফোন ফাস্ট হয়ে যাবে। গ্রগোল ক্রম অনেক ভাল ব্রাউজার কিন্তু এটা অনেক ভাড়ি। তাই বিভিন্ন লাইট ব্রাউজার যেমন মজিলা ফায়ার ফক্স্র, অপেরা, ইত্যাদি ব্রাউজার ব্য্হাার করুন। আর যদি গুগোল ক্রোম ভালই লাগে তাহলে লাইট অপশন চালু করে নিন। চাইলে মজিলা লাইট ও ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার মোবাইলে ভাল কাজ করবে কিন্তু প্রসেসর এবং র্যাম এর উপর কমচাপ প্রয়োগ করবে।
মোবাইলে লন্সার, থিম ব্যাবহার করে আপনার মোবাইলে নানা স্টাইল করা যায় কিন্তু তাতে আপনি নিজেই লক্ষ করবেন যে আপনার মোবাইল কতটা স্লো হয়ে গেছে। এর জন্যে আপনাকে এক্সট্রা লন্সার, থিম না ব্যহার না করাই ভাল। আর যদি ব্যবহার করতে অতিরিক্ত মন চায় তাহলে লাইট লন্সার গুলো ব্যবহার করুন।
আপনার মোবাইর ফোন ফাস্ট করার জন্য সবসময় আপডেট করুন। সব সময় বলবো না কারন অ্যান্ডোয়েড ৯ এর থেকে অ্যান্ডোয়েড ১০ বাড়তি অনেক অপশন যুক্ত থাকে যা আপনার মোবাইল ভাল পারফর্মেন্স করতে পারবে না। আপনার মোবাইল স্লো হয়ে যাবে। তাই বড় আপডেট্ একেবারেই দিবেন না। কিন্তু মোবাইলের সিকিইরিটি আপডেট যদি আসে তাহলে অবশ্যই আপডেট করে নিবেন।
আপনাকে কোন অ্যাপ ইনস্টল করার পূর্বে ভাল ভাবে ভাবতে হবে। আজেবাজে কোন অ্যাপ ইনন্টল করলে আপনার সময় নষ্ট, মোমোরি কষ্ট, ফোনে নানা রকম সমস্যা হতে পারে।
restarting প্রক্রিয়াটি প্রয়োগ করা হয় কম্পিউটারে। কম্পিউটারের অনেক ভাড়ি কাজ করার পর তা restarting করার প্রয়োজন হয়। তেমনি আপনার মোবাইল যখন reboot করবেন তখন আপনার মোবাইলের ঃtemporary files wডিলিট হয়ে যাবে, আপনার মেমোরি পরিস্কার হয়ে যাবে এবং আপনার মোবাইল ফাস্ট হয়ে যাবে।
তবে শেষ কথা হল এই যে আপনার মোবাইলের যদি কোন ঝাড়ি ঝুরি তে ভাল কাজ না করে, তাহলে আপনার মোবাইলে রিসেট মেরে দিন। একেবারে হার্ড রিসেট মেরে দিন। বিভন্ন মোবাইল এক্সপার্টদের মতে ৮-৯ মাস পর পর আপনার মোবাইলে রিসেট মারা ভাল। এতে আপনার মোবাইলে পারফরম্যান্স ভাল থাকবে।
আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কিন্তু যদি বুঝতে না পারেন তাহলে একটি ভিডিও লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি এটা দেখলে আরো পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারবেন। এখানে ক্লিক করুন