এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস : The Journey of Android

Android Introduction

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস

” এন্ড্রয়েড ” বা ” Android ” এই শব্দটার সাথে আমরা সবাই খুব ভালোভাবেই পরিচিত। এখন সম্ভবত একটা ছোট বাচ্চাও খুব ভালোভাবেই জানে Android কি এবং এটা দিয়ে কি করা হয়। Android শব্দটা শুনলেই এখন আমাদের চোখের সামনে আসে একটা কালারফুল ইউজার ইন্টারফেস, মিলিয়ন মিলিয়ন অ্যাপসে ভর্তি প্লে ষ্টোর, হাজার হাজার গেমস এবং অসাধারন কাস্টোমাইজেশনে ভর্তি একটা অপারেটিং সিস্টেম যা যতটাই সহজ ততটাই ইন্টারেস্টিং।

কিন্তু আপনারা সবাই জানেন আমরা আজকে এন্ড্রয়েড বলতে যা বুঝি বা দেখি এন্ড্রয়েড জিনিসটা সবসময় এমন ছিল না।আপনাকে যদি এখন বেশি না, আর মাত্র ৫  বছর আগের একটা এন্ড্রয়েড ফোন দেয়া হয় বা দেখানো হয় তখন আপনি হয়ত বলবেন এটার মত বিরক্তিকর ইউজার ইন্টারফেস বা বিরক্তিকর অপারেটিং সিস্টেম আর একটাও নাই। যাইহোক, এই টিউনটা এই এন্ড্রয়েডের বেশ কিছু বছরের ইতিহাস নিয়ে অর্থাৎ শুরুর দিকের সময় থেকে এই এন্ড্রয়েড ওএস কিভাবে আজকের অর্থাৎ ২০১৬/২০১৭ এর এন্ড্রয়েড ওএস এ পরিনত হল এটা নিয়ে। 🙂

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস

ফার্স্ট যখন এন্ড্রয়েড তৈরি করা হয় বা এন্ড্রয়েড এর ব্যাপারে সবধরনের কাজ সরবপ্রথম শুরু করা হয় তখন ২০০৩ সাল। হয়ত তখন আপনি বা আমি কেউ Android এই শব্দটা শুনিও নি কখনও। এন্ড্রয়েড ওএস সরবপ্রথম কে তৈরি করে জানেন ? গুগল ? না। সরবপ্রথম এন্ড্রয়েড তৈরি করেন Andy Rubin নামের একজন মানুষ যিনি এটি তৈরি করেছিলেন ডিজিটাল ক্যামেরার ওএস হিসেবে ইউজ করার জন্য।

কিছুদিন পড়ে তিনি বুঝতে পারেন যে তখন ডিজিটাল ক্যামেরার ব্যবহার খুব একটা বেশি ছিল না অর্থাৎ ডিজিটাল ক্যামেরার বাজার খুব একটা ভালো ছিলনা তখন। তখন থেকেই তিনি এন্ড্রয়েডকে একটা মোবাইল ফোন ওএস বা স্মার্টফোন ওএস হিসেবে তৈরি করার চেষ্টায় লেগে যান কিন্তু তখনও এন্ড্রয়েড নামটা খুব একটা বেশি পরিচিত ছিলনা মানুষের কাছে যতদিন না পর্যন্ত গুগল ২০০৫ সালে এন্ড্রয়েড কিনে নেয়। গুগল যখন এন্ড্রয়েড কিনে নেয় তখনও এন্ড্রয়েড এর অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না।

তবুও ২০০৫ সালে এই এন্ড্রয়েড প্লাটফর্ম কিনে নিয়েই গুগল মোবাইল বিজনেসে ঢোকার প্ল্যান করে এবং অবশেষে গুগল ফোন বিজনেসে হাত দিতে সফল হয় কিন্তু কোন হার্ডওয়্যার কোম্পানি হিসেবে না, সফটওয়্যার কোম্পানি হিসেবে। মূলত তখন গুগল অন্যান্য স্মার্টফোন কোম্পানিকে সহায়তা করত এন্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোন তৈরি করতে যা এখনো গুগল করে থাকে। যাইহোক, সর্বপ্রথম এই কাজটি করে এইচটিসি (HTC)। গুগলের সহায়তায় সর্বপ্রথম এন্ড্রয়েড ফোন তৈরি করে এইচটিসি যার নাম ছিল HTC Dream।

এরপরেই গুগলের সাথে এন্ড্রয়েডের পথচলা শুরু হয়। এরপরেই গুগল সিদ্ধান্ত নেয় এন্ড্রয়েড ওএস কে সবসময় আপডেটেড রাখার এবং যত দ্রুত সম্ভব নতুন নতুন ফিচারস এড করতে থাকার। এন্ড্রয়েডের প্রথম কয়েকটা ভারশন রিলিজ করার পরেই গুগল সিদ্ধান্ত নেয় বিষয়টাকে আরেকটু মজার করার জন্য।

যেমন এরপর থেকেই তারা প্রত্যেকটি এন্ড্রয়েড ভার্শন এর নামকরন করতে থাকে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি খাবারের নামে এবং প্রত্যেকটি নাম অ্যালফাবেটিকাল অর্ডারে সাজাতে থাকে যা এখনও চলছে এবং ভবিষ্যতেও এভাবেই চলতে থাকবে। এবং এরপর থেকেই আস্তে আস্তে মোবাইল বাজারে গুগল আরও ভালোভাবে ঢুকে যায় এবং আস্তে আস্তে আরও অনেক এন্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোন আসতে থাকে। এবার দেখা যাক, এর পর থেকে প্রত্যেকটি এন্ড্রয়েড ভার্শন এর নাম কিভাবে সাজানো হয়েছে এবং কি কি ফিচারস এড করা হয়েছে আস্তে আস্তে।

Android 1.0 (2008)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস

 

এই এনড্রয়েড ভার্শনটা অবশ্যই আমরা এখন যে এন্ড্রয়েড চিনি তেমন ফিচারপ্যাকড ছিল না কিন্তু বর্তমানে আমরা যে এন্ড্রয়েড চিনি তার সাথে কিছু সিমিলারিটিস অবশ্যই ছিল। যেমন এন্ড্রয়েডের এই ভার্শনেই সরবপ্রথম অ্যাপ স্টোর এড করা হয়। তখন এর নাম ” প্লে ষ্টোর ” ছিল না যদিও। এবং এই ভার্শনে নোটিফিকেশন বার এবং নোটিফিকেশন পুলডাউন ফিচার যোগ করা হয়। এছাড়া এই ভার্শন থেকেই এন্ড্রয়েডে হোমস্ক্রিনে Widget ইউজ করা সম্ভব হয়।

Android 1.5 (Cupcake) (2009)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস android 1.5

মুলত এই এন্ড্রয়েড ভার্শন থেকেই গুগল অফিশিয়ালি তাদের এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর নামকরন করতে শুরু করে মিষ্টি খাবারের নামে। এছাড়া এই ভার্শন থেকেই গুগল এন্ড্রয়েডে অন স্ক্রিন কিবোর্ড এড করে। এর আগে সব এন্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোণে ফিজিকাল কিবোর্ড থাকতে হত। এই আপডেটের পরে থেকেই থেকেই আর এন্ড্রয়েডে ফিজিকাল কিবোর্ড দরকার হয়না। এছাড়া এই আপডেটে থার্ড পার্টি অ্যাপসে Widget সাপোর্ট দেয়া হয়। কিন্তু সবথেকে বড় চেঞ্জ যেটা করা হয় তা হল ভিডিও করার সুবিধা দেয়া হয় এই ভার্শনে। হ্যাঁ। এর আগে এন্ড্রয়েডে ভিডিও ক্যাপচার করা যেত না। শুধুমাত্র ছবি তোলা যেত।

Android 1.6 (Donut) (2009)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস android 1.6

এটা খুব একটা বড় আপডেট ছিল না কিন্তু বেশ কয়েকটা ফিচারস এড করা হয় এই আপডেটে যেমন CDMA সাপোর্ট। এছাড়া এই ভার্শন এর পর থেকেই এন্ড্রয়েড বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন সাইজে চলতে পারত। এই ভার্শনের পর থেকেই বিভিন্নি স্ক্রিন সাইজের এন্ড্রয়েড মোবাইল বাজারে আসতে থাকে। এছাড়া এই ভার্শনে এনড্রয়েডে গুগল সার্চ বার এড করা হয় এবং এন্ড্রয়েড মার্কেট অর্থাৎ অ্যাপস স্টোর কিছুটা রিডিজাইন করা হয়।

Android 2.0 (Eclair) (2009)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস android 2.0

এটা মোটামোটি একটা বড় ধরনের আপডেট ছিল। এই ভার্শনে এন্ড্রয়েডে গুগল ম্যাপস নেভিগেশন ফিচার এড করা হয় এবং HTML 5 ব্রাউজার সাপোর্টও দেয়া হয় এই ভার্শনে। এছাড়া এই ভার্শনে লকস্ক্রিনেও কিছু চেঞ্জ করা হয়। Swipe to Unlock অ্যাড করা হয় লকস্ক্রিনে অনেকটা আইফোনের মত।

Android 2.2 (Froyo) (2010)

এই এনড্রয়েড ভার্শনের সাথেই গুগল তাদের নেক্সাস ডিভাইসের সাথে ইউজার দের পরিচয় করিয়ে দেয়। Nexus One ছিল প্রথম ডিভাইস যেটাতে এই আপডেটটি দেয়া হয়েছিল। এই ভার্শনে এন্ড্রয়েডে হোমস্ক্রিনের সংখ্যা বাড়ানো হয় এবং পারসোনাল ওয়াইফাই হটস্পট ক্রিয়েট করার সুবিধা দেয়া হয়। এছাড়াও এই ভার্শনে গ্যালারী অ্যাপটি রিডিজাইন করা হয়। এবং সবথেকে বড় যে ইমপ্রুভমেন্ট করা হয় সেটা হচ্ছে প্যাটার্ন ছাড়াও পিন কোড ব্যবহার করে স্ক্রিন আনলক করা।

Android 2.3 (Gingerbread) (2010)

এই এন্ড্রয়েড ভার্শন রিলিজ করার সাথে সাথে গুগল এবং স্যামসাঙ এর পার্টনারশিপও কনফার্ম হয় Nexus S রিলিজ করার মাধ্যমে যার নির্মাতা ছিল স্যামসাঙ। এই ভার্শনে খুব বেশি ফিচারস এড না করা হলেও প্রায় ইউজার ইন্টারফেস এর সব জায়গায় রিডিজাইন করা হয় বা ইম্প্রুভমেন্ট করা হয়। এছাড়া সবথেকে বড় যে ফিচারটি এড করা হয় তা হল ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরার সাপোর্ট।

Android 3.0 (Honeycomb) (2011)

এই এন্ড্রয়েড ভার্শন মুলত ট্যাবলেট এর জন্য রিলিজ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এই ভার্শনের সাহায্যে ট্যাবলেটে ইউজ করার জন্য এন্ড্রয়েডকে অপটিমাইজ করা হয়। এই ভার্শনের সবথেকে বড় ইম্প্রুভমেন্ট ছিল সফটওয়্যার বাটন এড করা। অর্থাৎ অন স্ক্রিন নেভিগেশন বার এড করা।

Android 4.0 (Ice Cream Sandwich) (2011)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস android 4.0

এই ভার্শনে আগের এন্ড্রয়েড ভার্শনের কিছু ফিচারস স্মার্টফোনে আনা হয় যেগুলো শুধুমাত্র ট্যাবলেট এর জন্য ছিল। যেমন অন স্ক্রিন নেভিগেশন বাটন। এছাড়া আরও কিছু ছোট ছোট ফিচারস এড করা হয় যেমন Face Unlock, Data usage count এবং মেইল, ক্যালেন্ডার ইত্যাদির জন্য রিডিজাইন করা নতুন নতুন অ্যাপস।

Android 4.1 (Jellybean) (2012)

এন্ড্রয়েড ভার্শনগুলোর ইতিহাস android 4.1

এই এন্ড্রয়েড জেলিবিন এর মাধ্যমেই এন্ড্রয়েডের নতুন যুগ শুরু হয়।  এই আপডেটের সবথেকে বড় ফিচার ছিল Google Now। এর আগের কোন এনড্রয়েড ভার্শনে  Google Now Cards ছিল না। এই গুগল নাও এর মাধ্যমেই বর্তমানে এন্ড্রয়েডে Artificial Intelligence এর সুচনা হয়। এছাড়া জেলিবিনে আগের থেকে সবচেয়ে বেশি অপ্টিমাইজেশন করা হয় যার ফলে এন্ড্রয়েডের Overall Smoothness, Touch performance এবং Stability অনেক বেশি ইম্প্রুভ হয়। তখনকার সময়ে এটাই ছিল এন্ড্রয়েডের সবথেকে বড় আপডেট।

Android 4.4 (Kitkat) (2013)

এন্ড্রয়েডের এই ভার্শন এর সাথে আমরা কম বেশি পরিচিত। কারণ এখনো অনেক এন্ড্রয়েড মোবাইলে এই ভার্শনটা ইউজ করা হয় এবং হচ্ছে। এই এন্ড্রয়েড ভার্শনটা সর্বপ্রথম রিলিজ করা হয় Nexus 5 এর সাথে। এই ভার্শনে জেলিবিনের কিছুটা ইউজার ইন্টারফেস চেঞ্জ করা হয় এবং রিডিজাইন করা হয়। এছাড়া এই ভার্শনে ফোণ ডায়ালার অ্যাপটি আরও ইম্প্রুভ করা হয়। এছাড়া এই ভার্শনে OK Google ফিচারটি অ্যাড করা হয় যার সাহায্যে ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে যেকোনো সময় গুগল সার্চ করা সম্ভব।

Android 5.0 (Lolipop) (2014)

এটাই ছিল এন্ড্রয়েড জেলিবিন এর পরে এন্ড্রয়েডের সবথেকে বড় আপডেট। এই আপডেটের সাহায্যে আবার নতুনভাবে এন্ড্রয়েডের নতুন যুগের সুচনা হয়। এই ভার্শনের সাথে প্রায় সবাইই পরিচিত। কারণ এটাই এখন সবথেকে বেশি ব্যবহার হওয়া এন্ড্রয়েড ভার্শন। এই ভার্শনে গুগল তাদের সব ধরনের ডিজাইন এলিমেন্ট চেঞ্জ করে। এই ভার্শনে গুগল সর্বপ্রথম Material Design এর সূচনা করে। এন্ড্রয়েড ললিপপে গুগল এন্ড্রয়েডের প্রায় সবকিছুই বদলে দেয় নতুন এনিমেশনস, নতুন আইকনস, মডার্ন ডিজাইন এবং নতুন কালারস এর সাহায্যে। এবং এই আপডেটের সাহায্যে গুগল Android TV এর সূচনা করে।

Android 6.0 (Marshmallow) (2015)

এই ভার্শনে মুলত এন্ড্রয়েড ললিপপের কিছু প্রবলেম ফিক্স করা হয় এবং কয়েকটা জায়গায় ইম্প্রুভমেন্ট করা হয়। এই ভার্শনে গুগল এন্ড্রয়েডে অফিশিয়ালি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর সাপোর্ট দেয়। এছাড়া উইন্ডোজ পিসির মত এন্ড্রয়েডেও মাল্টি ইউজার অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করার সুবিধা দেয়। এছাড়াও ব্যাটারি সেভিং এর জন্য নতুন ডোজ বা ডিপ স্লিপ মোড দেয়া হয় এবং এন্ড্রয়েডের আরও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের নতুন সেটিংস বা ফিচারস অ্যাড করে যা খুব বেশি নোটিসেবল না।

Android 7.0 (Nougat) (2016)

এই আপডেটের সবথেকে বড় ফিচার হচ্ছে মাল্টি উইন্ডো মোড যার সাহায্যে একই সময়ে ২ টা অ্যাপ একই সাথে ব্যবহার করা যাবে। এবং এই ভার্শনে গুগল নতুন একটি ফিচার অ্যাড করে যেটা হচ্ছে  Vulcan API যা গেমিং এর সময় আরও ভালো গ্রাফিক্স পারফরমেন্স পেতে সাহায্য করবে। এছাড়াও এই ভার্শনে গুগল পরিচয় করিয়ে দেয় তাদের নিজেদের Personal Assistant এর সাথে যার নাম Google Assistant এবং বর্তমানে যা খুব সহজেই Cortana এবং Siri এর কম্পিটেটর।  এছাড়া এই আপডেটের সাথেই গুগল তাদের নতুন মোবাইল ডিভাইস Google Pixel রিলিজ করে।

Android O (2017)

এটা এখন পর্যন্ত গুগলের সর্বশেষ আপডেট বা লেটেস্ট এন্ড্রয়েড ভার্শন। এই ভার্শনেও খুব বেশি কোন চেঞ্জ বা ইম্প্রুভমেন্ট থাকবে না। যেহেতু এই ভার্শনটি এখনো পাবলিক রিলিজ হয়নি তাই এটা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে কয়েকটি নেক্সাস ডিভাইস এবং পিক্সেল ফোনের জন্য এই ভার্শনের বেটা আপডেট রিলিজ করেছে গুগল। এবং এই ভার্শনে ইউজার ইন্টারফেস ইম্প্রুভমেন্টই বেশি থাকবে আশা করা যায়।

এর পরের ভার্সন গুলো তো আপনারা খুব ভালই জানেন। যদি চান সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি তাহলে কমেন্টে জানান।

Add Comment